মুশফিকের ব্যাটে বাংলাদেশের বড় জয়

মুশফিকুর
  © সংগৃহীত

অনেক নাটকীয়তার ঢাকা টেস্ট বড় ব্যবধানে জিতে নিল বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার ম্যাচের চতুর্থ দিনের মধ্যাহ্ন বিরতির একটু পরই ৭ উইকেটে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সাকিব আল হাসানের দল। অপরাজিত হাফ সেঞ্চুরি করেছেন মুশফিকুর রহিম। ২৩ বছরে এটা বাংলাদেশের ১৭ তম টেস্ট জয়। ৪ বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে আয়ারল্যান্ড যে লড়াই করেছে, সেটা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। 

১৩৮ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে তামিম ইকবালের ওপেনিং সঙ্গী হন লিটন দাস। দলীয় ৩২ রানে প্রথম উইকেটের পতন হয়। মার্ক অ্যাডায়ারের বলে দুর্ভাগ্যজনকভাবে বোল্ড হন ১৯ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় ২৩ রান করা লিটন। বল তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে শরীরে লেগে স্টাম্পে আঘাত হানে। তিনে নামানো হয় শান্তকে। প্রথম ইনিংসে ‘গোল্ডেন ডাক’ মারা শান্ত ৪ রানের বেশি করতে পারেননি। ম্যাকব্রেইনের বলে স্লিপে খুব কঠিন ক্যাচ নেন বালবার্নি। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি শান্ত। ৪৩ রানে ২ উইকেট পতনের পর উইকেটে আসেন মুশফিক। বাউন্ডারি মেরে তিনি রানের খাতা খোলেন। ৫৫ বলে ৫০ রান আসে বাংলাদেশের। মধ্যাহ্নবিরতির আগে টাইগাররা তোলে ২ উইকেটে ৯২ রান।

মধ্যাহ্ন বিরতির পর ১৮.৩ ওভারেই বাংলাদেশের স্কোর তিন অংক স্পর্শ করে। দলীয় ১০৫ রানে বেন হোয়াইটের বল তামিম ইকবালের ব্যাটের কানায় লেগে উঠে যায়। কমিন্সের তালুবন্দি হয়ে ৩১ রানে ফিরেন তামিম। ভাঙে ৬২ রানের জুটি। ৪৭ বলে ফিফটি তুলে নেন মুশফিক। ২৮তম ওভারেই ৭ উইকেটে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। মুশফিক ৪৮ বলে ৭ চারে ৫১* রানে অপরাজিত থাকেন। আর মুমিনুল অপরাজিত থাকেন ২২ বলে ২০* রানে।

এর আগে আজ শুক্রবার ঢাকা টেস্টের চতুর্থ দিনে প্রথম ব্রেক থ্রু দেন ইবাদত হোসেন। তার চোখ ধাঁধানো একটা সুইং বল ডিফেন্ড করতে গিয়েছিলেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রেইন। কিন্তু তাকে বোকা বানিয়ে বল স্টাম্পে আঘাত হানে। ১৫৬ বলে ৭২ রানের ইনিংস খেলে ফিরেন ম্যাকব্রেইন। এরপর গ্রাহাম হিউমকে (২) লিটন দাসের গ্লাভসবন্দি করে আইরিশদের দ্বিতীয় ইনিংসের ইতি টেনে দেন ইবাদত। ২৯২ রানে অল-আউট হয় আয়ারল্যান্ড। ৩৭ রানে এই পেসারের শিকার ৩টি। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া তাইজুল এবার ৪২ ওভারে ১৬ মেডেনসহ ৯০ রানে নেন ৪ উইকেট। অধিনায়ক সাকিব নিয়েছেন ২টি।

ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২১৪ রানে অল-আউট হয়েছিল আয়ারল্যান্ড। জবাবে বাংলাদেশ তাদের প্রথম ইনিংসে করেছিল ৩৬৯ রান। সেঞ্চুরি হাঁকান মুশফিকুর রহিম। এছাড়া সাকিব-মিরাজের ব্যাট থেকেও আসে পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস। ১৫৫ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে আয়ারল্যান্ড। এই ইনিংসে তারা রীতিমতো চমকে দেয় টাইগারদের। অসাধারণ ব্যাটিংয়ে ২৯২ রানে অল-আউট হয়ে বাংলাদেশকে জয়ের জন্য ১৩৮ রানের টার্গেট দেয়। লরকান টাকার ১০৮ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন। ম্যাকব্রেইন করেন ৭২ রান।

দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ১৪ হাজার রান মুশফিকের

দেশের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ১৪ হাজার রান করেছেন মুশফিকুর রহিম। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুরে অনুষ্ঠিত একমাত্র টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ওই কীর্তি স্পর্শ করেন তিনি। এর আগে দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১৪ হাজার রানের কীর্তি স্পর্শ গড়েন ওপেনার তামিম ইকবাল। দেশের প্রথম ১৫ হাজার রান করা ক্রিকেটারও তিনি। 

মুশফিক ২৪৫ ওয়ানডে খেলে সাত হাজার ৪৫ রান করেছেন। ১০২ আন্তর্জাতিক টি-২০ খেলে দেড় হাজার রান করেছেন তিনি। জাতীয় দলের হয়ে আইরিশদের বিপক্ষে তিনি ৮৫তম টেস্ট খেলতে নামেন। ওই টেস্টের আগে তিন ফরম্যাটে তার রান ছিল ১৩ হাজার ৮৬৬। 

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে তিনি ১২৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। টেস্ট ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চুরি তুলে নেন। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে আট রান করতেই ১৪ হাজারের ঘরে ঢুকেছেন তিনি। তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ১৪ হাজার রান করার কীর্তি থেকে ১৫ রান দূরে আছেন সাকিব।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ