শান্ত-হৃদয়ের ব্যাটে পাহাড় টপকে অবিশ্বাস্য জয় টাইগারদের

ক্রিকেট
অবিশ্বাস্য জয় টাইগারদের  © ক্রিকইনফো

শেষ ওভারে বাংলাদেশের জয়ের জন্য দরকার ছিল মাত্র ৫ রান। বোলিংয়ে আইরিশ পেসার মার্ক এডেয়ারের প্রথম দুই বলে কোনো রান নিতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। তৃতীয় বল সজোরে মেরে সীমানার কাছাকাছি ক্যাচ দিয়ে বসেছিলেন তিনি। তবে বল কোমরের ওপরে উঠে যাওয়ায় আম্পায়ার নো বলের সংকেত দেন। এরপর ফ্রি হিটের বলে সুইপে উইকেটের পিছন দিয়ে সীমানা ছাড়া করেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল।

শুক্রবার (১২ মে) ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডের কাউন্টি গ্রাউন্ডে তিন ম্যাচ সিরিজের বৃষ্টিবিঘ্নিত দ্বিতীয় ওয়ানডেতে রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচে আইরিশদের ৩২০ রানের পাহাড়সম টার্গেট ৩ উইকেট হাতে রেখেই জিতে নিয়েছে টাইগাররা। এই জয়ে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল তামিম ইকবালের দল। সিরিজের প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়ে গিয়েছিল।

এদিন আয়ারল্যান্ডের রান তাড়ায় দ্রুতই আউট হয়ে ফিরেছেন টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল। চতুর্থ ওভারে মার্ক এডেয়ারের বলে লেগ স্কয়ারে ফ্লিক করতে গিয়ে শর্টে থাকা ফিল্ডার ডকরেলের হাতে তালুবন্দী হয়েছেন তিনি। আউট হওয়ার আগে টাইগার অধিনায়ক করেছেন ১৩ বলে ৭ রান। তামিমের আউটের পর বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি লিটন দাসও।

দশম ওভারে দলীয় ৪০ রানের মাথায় মনোযোগ সরিয়ে খেসারত দিতে হয় লিটনকে। গ্রাহাম হিউমের করা অফ স্টাম্পের বাইরের বলে অযথাই খোঁচা দিয়ে উইকেটরক্ষক লোরকান টাকার সেটি তালুবন্দী করতে মোটেও ভুল করেননি। বিদায়ের আগে লিটন ২১ বলে ২১ রান করেন। এরপর ক্রিজে আসেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। নাজমুল শান্তকে নিয়ে ধীরে ধীরে দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন তিনি।

দুজনে ৪৭ বলে যোগ করেন ৬১ রান। কিন্তু ক্যাম্পারের বলে খেলতে গিয়ে যেন ক্যাচ অনুশীলন করে বসেন সাকিব। ব্যাকফুটে গিয়ে খেলতে গিয়ে ব্যক্তিগত ২৬ রানের মাথায় ডকরেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। সাকিবের বিদায়ের পর বাংলাদেশের রানের চাকা থামেনি। হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে এগোতে থাকেন। শান্ত ৪৯ বলে তুলে নেন ফিফটি। ফিফটির পর চওড়া হয় তার ব্যাট।

অন্যদিকে হৃদয় সাবলীল ভঙ্গিতে বল-রানের পার্থক্য ধরে রেখে খেলেন। দুজনে ১৩১ রানের জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নেন। ৩৪তম ওভারের প্রথম বলে ডকরেলকে মিড উইকেটে পুল করে ডাবল নেন শান্ত। যার সুবাদে এক লাফে ৯৯ থেকে চলে যান তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে। ক্যারিয়ারে প্রথম শতক হাঁকান মাত্র ৮৩ বলে। তবে ওই ওভারেই ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি হাঁকানো তাওহিদ হৃদয় ৬৮ রান করে আউট হয়ে যান।

পড়ুন>>> তিন সমুদ্রবন্দরে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত

এরপর শান্তও বেশিক্ষণ আর থাকতে পারেননি। দলীয় ২৫৭ রানের মাথায় ক্যাম্পারের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন এই ব্যাটার। বিদায়ের আগে ৯৩ বলে ১২ চার ও ৩ ছক্কায় ১১৭ রান করেন শান্ত। দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে আবারও ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল সফরকারীরা। তবে অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন।

Umpire Adrian Holdstock signals a no-ball and Mushfiqur Rahim survives

এতে মেহেদি হাসান মিরাজের ১২ বলে ১৯, তাইজুল ইসলাম ৯ ও শরীফুল ইসলামের ৪ রানে ভর করে ৪৯.৩ ওভারে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। শেষ পর্যন্ত মুশফিক অপরাজিত থাকেন ২৮ বলে ৩৬ রানে।

বোলিংয়ে আয়ারল্যান্ডের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন মিডিয়াম পেসার কার্টিশ ক্যাম্ফার ও বাহাতি স্পিনার জর্জ ডকরেল। এছাড়া একটি করে উইকেট পান জশ লিটল, মার্ক এডেয়ার ও গ্রাহাম হিউম।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ