নাশতা বিক্রেতা থেকে বিশ্বকাপের মঞ্চে হারিস রউফ

ক্রিকেট
হারিস রউফ  © আইসিসি

ক্রিকেটে হারিসের পথচলা সিনেমার গল্পকেও হার মানাবে। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি ঝোঁক ছিল রউফের। এই খেলাই এখন তাকে এনে দিয়েছে তারকাখ্যাতি। তার বোলিংয়ের মূল অস্ত্র গতি। নিয়মিত ১৪৫ কি.মি গতির ওপর বল করার সামর্থ্য আছে তার। ব্যাটসম্যানদের ত্রাস রউফ এখন পাকিস্তান জাতীয় দলের পেস বোলিং বিভাগের অন্যতম সেরা অস্ত্র। খেলতে যাচ্ছেন ওয়ানডে বিশ্বকাপে।

জানলে অবাক হবেন, হারিস রউফ একসময় নিজের খরচ জোগাতে বাজারে বিক্রি করতেন নাশতা। সম্প্রতি জনপ্রিয় ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোর এক তথ্যচিত্রে এমনটা জানিয়েছেন পাকিস্তানের তারকা পেসার।

১৯৯৩ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে জন্ম হারিসের। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই ক্রিকেট খেলেছেন হারিস। অবশ্য সেটা টেপ টেনিস বলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ মেটাতে গিয়েই ক্রিকেট খেলছেন এই পাকিস্তানি পেসার।

প্রামাণ্যচিত্রে হারিস বলেন, ‘ম্যাট্রিকের পরে আমি বাজারে গিয়ে খাবার বিক্রি করতাম খরচ জোগানোর জন্য। রোববারে নাশতাও বিক্রি করতাম। মায়ের একটা স্বপ্ন ছিল নিজেদের একটা বাড়ি হবে। যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই, বাবা আমার ফি দেওয়ার মতো আয় করতেন না। আমি নিজেও এমন আয় করতাম না। কিন্তু টেপ টেনিস ক্রিকেট খেলে সহজেই ফি দিতে পারতাম। টেপ টেনিস ক্রিকেট খেলে পাকিস্তানে ক্রিকেটাররা দুই থেকে আড়াই লাখ রুপি পর্যন্ত আয় করতে পারেন। আমিও এমন আয় করতাম আর টাকা মায়ের হাতে দিতাম।’

২০১৭ সালে হারিস লাহোর কালান্দার্সের ট্রায়ালে অংশ নেন এবং কোচ আকিব জাভেদের চোখে পড়েন। আকিবই মূলত বদলে দিয়েছেন হারিসকে। সেই ট্রায়াল থেকে তাঁর যাত্রা শুরু। কীভাবে ট্রায়ালে পাকিস্তানের সাবেক পেসার আকিবের চোখে পড়েন হারিস, সেই গল্পও শুনিয়েছেন।

হারিস আরও বলেন, ট্রায়ালে যারা ঘণ্টায় ৮৩ থেকে ৮৪ মাইল গতিতে বল করছিলেন, তাদের নির্বাচন করা হচ্ছিল। কিন্তু আমি যখন বল করি, প্রথম বলের গতি ছিল ঘণ্টায় ৮৮ মাইল। কোচ তাহির মুঘল ভেবেছিলেন স্পিড মেশিনে কোনো সমস্যা আছে। তিনি আকিব ভাইকে ডাক দেন। আকিব ভাই আমাকে বল করতে বলেন, দ্বিতীয় বলটা করলাম ৯০ মাইল গতিতে। যখন আবার বোলিং করতে বললেন, তৃতীয় বলটা করলাম ৯২ মাইল গতিতে।

মূলত, এই ট্রায়ালের পরই জীবন বদলে যায় হারিসের। সেই ট্রায়াল থেকে তিনি যান অস্ট্রেলিয়া। ২০১৮ সালে আবুধাবি টি-টোয়েন্টি ট্রফির জন্য লাহোর কালান্দার্স দলে ডাক পান হারিস। এভাবেই পাকিস্তানের ক্রিকেটে তার আগমন।

এরপর ঘরোয়া ক্রিকেটে নজরকাড়া পারফরম্যান্স করে অল্প সময়েই জাতীয় দলের জায়গা করে নেন। আর প্রথমবারের মতো খেলতে যাচ্ছেন বিশ্বকাপে। চোটে কারণে নাসিম শাহ না থাকায় বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে রউফকে। ওয়ানডে বিশ্বকাপেও এই ডানহাতি পেসারের দিকে সবার নজর থাকবে।