অঙ্ক মেলাতে পারলো না চেন্নাই, দাপুটে প্রত্যাবর্তনে প্লে-অফে বেঙ্গালুরু
- স্পোর্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৪, ০৮:০৭ AM , আপডেট: ১৯ মে ২০২৪, ০৮:০৭ AM
-11908.jpg)
শুরুর আট ম্যাচের মধ্যে সাত ম্যাচ হারার পর কে ভেবেছিল আইপিএলের প্লে-অফে যাবে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু? কারও না ভাবার মত সেই কাজটাই করে দেখালো ব্যাঙ্গালুরু। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) দিনের একমাত্র ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসকে ২৭ রানে হারিয়ে টানা ৬ জয়ের ফলে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে ব্যাঙ্গালুরু। অন্যদিকে বিদায় নিয়েছে চেন্নাই।
ব্যাঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় চেন্নাই সুপার কিংস। আগে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার বিরাট কোহলি এবং ফাফ ডু প্লেসির ব্যাটে চড়ে ভালো শুরু পায় ব্যাঙ্গালুরু। খুব আগ্রাসী না হলেও পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে রান তুলতে থাকেন কোহলি এবং ডু প্লেসি। শুরুতে ডু প্লেসি কিছুটা ধীরে এগোলেও সাবলীল ছিলেন কোহলি। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে বিনা উইকেটে ৪২ রান তোলে ব্যাঙ্গালুরু।
পাওয়ারপ্লে শেষে কিছুটা হাত খুলে মেরেছেন ডু প্লেসি। কোহলিও চলে যান ফিফটির খুব কাছে। তবে শেষমেশ ফিফটিটা আর ছোঁয়া হয়নি তার। দলের ৭৮ রানের মাথায় ভেঙেছে দুজনের উদ্বোধনী জুটি। ২৯ বলে ৪৭ রান করে বিদায় নেন কোহলি।
ডু প্লেসি অবশ্য তুলে নিয়েছেন ফিফটি। দলীয় ১১৩ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরার আগে ৩৯ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। তিনে নামা রজত পতিদার এবং চারে নামা ক্যামেরন গ্রিনও ছিলেন বেশ মারমুখি। অল্প সময়েই ক্রিজে দারুণভাবে জমে যান দুজন। তাদের ব্যাটে চড়ে বড় সংগ্রহের দিকে এগোতে থাকে ব্যাঙ্গালুরু।
দলের ১৮৪ রানের মাথায় আউট হওয়ার আগে ২৩ বলে ৪১ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন পতিদার। শেষ দিকে ছোট দুটি কার্যকরী ইনিংস খেলেন দীনেশ কার্তিক এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ৬ বলে ১৪ রান করেন কার্তিক। ম্যাক্সওয়েল খেলেন ৬ বলে ১৫ রানের ইনিংস। অন্যদিকে শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে ১৭ বলে ৩৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন গ্রিন। নির্ধারিত ২০ ওভারের খেলা শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ২১৮ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু।
চেন্নাইয়ের হয়ে ৬১ রান খরচায় ২ উইকেট নেন শার্দুল ঠাকুর। এছাড়া ১টি করে উইকেট শিকার করেন মিচেল স্যান্টনার এবং তুষার দেশপান্ডে।
জবাব দিতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই ওপেনার এবং অধিনায়ক রুতুরাজ গাইকোয়াদের উইকেট হারিয়ে ফেলে চেন্নাই। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে গোল্ডেন ডাক মেরে সাজঘরে ফিরেছেন দলের অধিনায়ক। এরপর তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি ড্যারিল মিচেলও। ৬ বলে ৪ রান করে দলের ১৯ রানের মাথায় আউট হন তিনি।
শুরুর ধাক্কা সামাল দেন টিকে থাকা ওপেনার রাচিন রবীন্দ্র এবং চারে নামা আজিঙ্কা রাহানে। দারুণ দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দলের ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন দুজন। তাদের ব্যাটে চড়ে চাঙ্গা হয় চেন্নাইয়ের ইনিংস। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৫৮ রান তোলে চেন্নাই।
পাওয়ারপ্লে শেষেও চলেছে রাহানে-রাচিনের বীরত্ব। ক্রিজে দারুণভাবে জমে যাওয়া দুই ব্যাটারের কার্যকরী ব্যাটিংয়ের ফলে কক্ষপথেই ছিল চেন্নাই। দুজনের জুটি ভেঙেছে দলের ৮৫ রানের মাথায়। ২২ বলে ৩৩ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন রাহানে। তবে রাচিন টিকে ছিলেন। দারুণ ব্যাটিংয়ে তুলে নিয়েছেন ফিফটিও। দারুণ খেলতে থাকা রাচিন থেমেছেন দলীয় ১১৫ রানের মাথায়। সাজঘরে ফেরার আগে ৩৭ বলে ৬১ রানের ঝলমলে এক ইনিংস খেলেছেন রাচিন রবীন্দ্র।
রাচিনের বিদায়ের পর কিছুটা কমে যায় চেন্নাইয়ের রানের গতি। ১৫ বলে ৭ রান করে বিদায় নেন শিভাম দুবে। সুবিধা করতে পারেননি মিচেল স্যান্টনারও। ৪ বলে ৩ রান করে মোহাম্মদ সিরাজের বলে ফাফ ডু প্লেসির অসাধারণ এক ক্যাচ হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। ১২৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে তখন প্রচণ্ড চাপে চেন্নাই।
প্লে-অফে যেতে চেন্নাইয়ের সমীকরণ ছিল ২০১ রান করতে পারলেই চলবে, এরপর হেরে গেলেও সমস্যা নেই। তবে এই সমীকরণই বেশ জটিল হয়ে পড়ে শেষ দিকে। শেষ দিকে দলের হাল ধরেন রবীন্দ্র জাদেজা এবং মহেন্দ্র সিং ধোনি। দুজনের দারুণ বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিংয়ে বেশ জমে উঠে ম্যাচ। শেষ ওভারে জয়ের জন্য চেন্নাইয়ের দরকার ছিল ৩৫ রান আর প্লে-অফে যেতে দরকার ছিল ১৭ রান। ধোনি প্রথম বলেই হাঁকান ছক্কা। তবে পরের বলেই হয়েছেন আউট। এরপর ১ বল ডট। পরের বলে সিঙ্গেল নেন শার্দুল ঠাকুর। শেষ ২ বলে ১০ রান দরকার ছিল। জাদেজা স্ট্রাইকে থাকলেও নিতে পারেননি কোনো রান। ২৭ রানের দারুণ জয়ের ফলে প্লে-অফের টিকিট কেটে ফেলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। বিদায় নেয় চেন্নাই সুপার কিংস।
ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে ২ উইকেট নেন যশ দয়াল। এছাড়া ১টি করে উইকেট শিকার করেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, ক্যামেরন গ্রিন, লকি ফার্গুসন এবং মোহাম্মদ সিরাজ।