মেসির হ্যাটট্রিকে বলিভিয়ার জালে ৬ গোল আর্জেন্টিনার
- স্পোর্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৪৫ AM , আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৪৫ AM

উড়তে থাকা আর্জেন্টিনার হঠাৎ ছন্দপতন হয়েছিল সর্বশেষ দুই ম্যাচে। গতবছরের নভেম্বরে উরুগুয়ের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে হারের পর সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ১২ ম্যাচে জয়ের দেখা পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। এর মধ্যে জিতে নিয়েছে কোপা আমেরিকার শিরোপাও। সেই আর্জেন্টিনাই গত মাসে কলম্বিয়ার বিপক্ষে হেরে বসে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে। এখানেই শেষ নয়, গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষেও ড্র (১-১) করে বসে লিওনেল স্কালোনির দল।
টানা দুই ম্যাচে পয়েন্ট খোয়ানোর রাগ আজ বলিভিয়ার ওপর ঝেড়েছে আর্জেন্টিনা। ঘরের মাঠ মনুমেন্তালে লিওনেল মেসির হ্যাটট্রিকে বলিভিয়াকে ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। সেটাও আবার ম্যাচটাকে একপেশে বানিয়ে। হ্যাটট্রিকের সঙ্গে দুটি গোলে অ্যাসিস্টও করেছেন মেসি। আর্জেন্টিনার হয়ে বাকি তিনটি গোল করেছেন হুলিয়ান আলভারেস, লওতারো মার্তিনেস ও থিয়াগো আলমাদা।
আর্জেন্টিনা যে আজ আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলবে, সেটা একাদশ দেখেই বোঝা গিয়েছিল। আক্রমণভাগে মেসির সঙ্গে আলভারেস ও মার্তিনেসকে নামান স্কালোনি। পুরো ম্যাচে আর্জেন্টিনা কতটা দাপুটে ফুটবল খেলেছে, সেটা স্কোরলাইনই বলে দিচ্ছে। ম্যাচের ৭২ শতাংশ বলের দখল ছিল আর্জেন্টিনার পায়ে। বলিভিয়ার ৪ শটের বিপরীতে আর্জেন্টিনা শট নিয়েছিল ১৪টি, যার ১০টিই ছিল গোলমুখে।
মনুমেন্তালে আজ ম্যাচের শুরু থেকেই বলিভিয়ার রক্ষণ শিবিরে আক্রমণের ঢেউ তোলে আলবিসেলেস্তেরা। তবে গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ১৯ মিনিট পর্যন্ত। আর্জেন্টিনার আক্রমণে দিশেহারা বলিভিয়া রক্ষণের ভুলের সুযোগে বল পেয়ে অনেকটা ফাঁকায় দাঁড়ানো মেসিকে পাস দেন মার্তিনেস। সেটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সের ভেতর ঢুকে পড়েন মেসি। সামনে শুধু বলিভিয়া গোলকিপার গুলিয়ের্মো ভিস্কারা। এক ডিফেন্ডার ঠেকাতে এসেছিলেন। কিন্তু তার আগেই মেসির শট আশ্রয় নেয় বলিভিয়ার জালে।
ম্যাচের ৩৩ মিনিটে প্রায় দ্বিতীয় গোলের দেখা পেয়েছিলেন মেসি। বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া আর্জেন্টাইন মহাতারকার ফ্রি-কিক বাঁদিকে ঝাপিয়ে ঠেকিয়ে দেন ভিস্কারা। এ যাত্রায় বলিভিয়া রক্ষা পেলেও ১০ মিনিট পর মেসিকে ঠেকাতে পারেনি তারা। তবে এবার নিজে গোল করেননি সাবেক বার্সা তারকা। করিয়েছেন লওতারো মার্তিনেসকে দিয়ে।
বল নিয়ে আক্রমণে ওঠা মেসি এমন জায়গায় ছিলেন, চাইলে নিজেই শট নিতে পারতেন। সেটা না করে আরও বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা মার্তিনেসকে পাস দেন মেসি। সেখান থেকে গোল করতে তেমন বেগ পেতে হয়নি ইন্তের মিলান স্ট্রাইকারকে।
প্রথমার্ধেই তৃতীয় গোলের দেখা পায় আর্জেন্টিনা। এ গোলেও জড়িয়ে আছে মেসির নাম। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে মেসির ফ্রি কিকে স্কোরলাইন ৩-০ করেন হুলিয়ান আলভারেস।
বিরতির পরও আর্জেন্টিনার আক্রমণ অব্যাহত থাকে। এর মধ্যে ৪৯ মিনিটে আরেক দফা গোল উৎসব করেছিল আর্জেন্টিনা। সে গোলটি বাতিল হয় অফসাইডে। তাতে অবশ্য ম্যাচের স্কোরলাইনে খুব বেশি প্রভাব ফেলেনি। ম্যাচের ৭০ মিনিটে নাহুয়েল মলিনার ক্রস থেকে স্কোরলাইন ৪-০ করেন আলভারেসের বদলি নামা আলমাদা।
চার গোল করেই থেমে যায়নি আর্জেন্টিনা। আরও বেশি গোলক্ষুধা নিয়ে আক্রমণ চালাতে থাকেন মেসি-নিকো পাসরা। তবে বাকি সময়টা শুধুই মেসির। ইন্টার মায়ামি তারকাকে বহু প্রচেষ্টাতেও ঠেকাতে পারেনি বলিভিয়া ডিফেন্স।
ম্যাচের ৮৪ মিনিটে এক্সিকিয়েল প্যালাসিওসের পাস থেকে বল পেয়ে বিপজ্জনকভাবে বলিভিয়া বক্সে ঢুকে পড়েন মেসি। সেখানে কয়েক ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে ডান পায়ের শটে বলিভিয়া গোলকিপারকে পরাস্ত করেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। এর দু মিনিট পরে প্রায় একইভাবে হ্যাটট্রিক পূরণ করে আর্জেন্টিনা।
এ জয়ে ১০ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে লাতিন অঞ্চলের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেই আছে আর্জেন্টিনা। সমান ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার সপ্তম স্থানে বলিভিয়া।