নেতা-নেত্রীর ছবি নয়, ছাদ খোলা বাসে শুধু মেয়েরাই

 ফুটবল
  © ফাইল ফটো

মনিকা আর ঋতুপর্নার গোলে হিমালয়ের বুকে আরও একবার ফুটবলের ফুল ফুটিয়েছে বাংলাদেশ। টানা দ্বিতীয়বারের মতো তারা জয় করেছে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। দুই বছর আগেও কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে স্বাগতিক নেপালকে হারিয়েই প্রথমবার জয় করেছিল দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপখ্যাত এই টুর্নামেন্টের শিরোপা। তারপর দলটির তারকা ফুটবলার সানজিদা আক্তারের ইচ্ছা পূরণ করতেই বাফুফে ছাদখোলা বাসে অভ্যর্থনা জানিয়েছিল চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের।

যে ছাদখোলা বাসে চড়ে মেয়েরা জয়যাত্রী করেছিলেন রাজধানীতে সেটা আবার সাজানো হয়েছিল নানা জনের ছবি দিয়ে। একপাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি বড় করে, অন্যদিকে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের ছবি। তাছাড়া বাফুফের কর্তাদেরও ছবি ছিল। যা নিয়ে সারাদেশে ব্যপক সমালোচনা হয়েছিল।

ছাদখোলা বাসে সংবর্ধনা শুধু বাংলাদেশেই না, বিশ্বের আরও নানান দেশই দিয়েছে। কিন্তু কখনই সেই বাসে খেলোয়াড় বা চ্যাম্পিয়ন দল ব্যতিত অন্য কারোর ছবি থাকে না। কিন্তু বাংলাদেশ বা বাফুফে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী কাজ করতে গিয়ে হয়েছে নিন্দিত ও সমালোচিত। যদিও এসব সমালোচনা কানে তুলেননি বাফুফের তৎকালীন সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনসহ তার ফেডারেশনের কর্তারা।

তবে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে বদলে গেছে অনেক কিছুই। বদল এসেছে বাফুফের কমিটিতেও। প্রায় দেড় যুগ পর নতুন সভাপতি পেয়েছে বাফুফে। আর সেই বদলে যাওয়া বাংলাদেশে আরও একবার সাফ জিতে মাথা উঁচু করে শিরোপা নিয়ে দেশে ফিরছেন সাবিনা খাতুনরা। তাই তাদেরকে আরও একবার ছাদখোলা বাসে দেওয়া হবে সংবর্ধনা।

দুই মাস ধরে বেতন পান না সাফজয়ী মেয়েরাদুই মাস ধরে বেতন পান না সাফজয়ী মেয়েরা
এই বদলে যাওয়া বাংলাদেশে পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে বাফুফের মানসিকতাতেও। এবার ছাদখোলা বাসে শুধুই চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের ছবি। চ্যাম্পিয়ন ট্রফির সঙ্গে অফিসিয়াল ফটোসেশনের সবাইকে রাখা হয়েছে। শুরুর একাদশে থাকা দলের ছবিও আছে। সেইসঙ্গে আছে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে গোল্ডেন বল জেতা ঋতুপর্না চাকমার ট্রফি গ্রহণের ছবিও।

সেই বাসের ছবি প্রকাশ্যে আসতেই প্রশংসায় ভেসেছেন বাফুফের বর্র্তমান কমিটির কর্তারা। এমনকি অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে তাদেরকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। যদিও কেউ কেউ আবার দাবি করেছেন গতবারের সাফজয়ী দল এবং ২০০৩ সালের সাফজয়ী রজনীকান্ত বর্মন, আলফাজ আহমেদদের ছবি দিলেও বিষয়টা আরও ভালো হত।

তবে বিশ্বের যেকোনো দেশই যখন সংবর্ধনা দেয়, তখন শুধুই চ্যাম্পিয়ন দলকে সামনে রাখে। বাফুফেও এবার ছাদখোলা বাসে শুধুই সাফজয়ী মেয়েদের রেখেছে। আর এই কারণেই শুধু বাফুফেকে এবার প্রশংসায় ভাসিয়েছেন সবাই।