অস্ট্রেলিয়াকে বিধ্বস্ত করে ২২ বছর পর সিরিজ জয়ের স্বাদ পেলো পাকিস্তান

পাকিস্তান
  © সংগৃৃহীত

মোহাম্মদ রিজওয়ানের নেতৃত্বে পাকিস্তান ২২ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেলো। পার্থে তৃতীয় এবং শেষ ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়াকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করেছে ম্যান ইন গ্রিনরা। সবশেষ পাকিস্তান ২০০২ সালে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল। এই দলের সাইম আইয়ুবের বয়স তখন ১ মাসও হয়নি। আর নাসিম শাহ তখন জন্মগ্রহনই করেননি। তখনকার পাকিস্তান দলে ছিলেন ওয়াসিম আকরাম, সাঈদ আনোয়ারের মতো তারকারা। 

রোববার (১০ নভেম্বর) তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে পার্থে অনুষ্ঠিত ম্যাচে পাকিস্তান ৮ উইকেটে জয়লাভ করে। আগে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়া পাক পেসারদের তোপে মাত্র ১৪০ রানে গুড়িয়ে যায়। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন শ্যান অ্যাবট। জবাবে পাকিস্তান ১৩৯ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয় তুলে নেয়। এ জয়ের ফলে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ পাকিস্তান ২-১ এ জিতে নিলো। টুর্নামেন্ট জুড়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখানোয় ম্যাচ ও সিরিজ সেরার পুরস্কার উঠে হারিস রউফের হাতে। 

অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তান অধিনায়ক রিজওয়ান। পাকিস্তানের পেস আক্রমণের সামনে অস্ট্রেলিয়া টিকতে পারেনি। শাহিন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ, মোহাম্মদ হাসনাইন, এবং হারিস রউফের বিধ্বংসী বোলিংয়ে ১৪০ রানে অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিক দল। শন অ্যাবট দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন।

১৪১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানের দুই ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক ও সাইম আইয়ুব ভালো শুরু এনে দেন। উদ্বোধনী জুটিতে এ দু’জন করেন ৮৪ রান। শফিক ৫৩ বলে ১ ছক্কা ও ১ চারে ৩৭ রান করে মরিসের বলে বিদায় নেন। একই ওভারের শেষ বলে ৫২ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৪২ রান করা সাইম আইয়ুবকেও তুলে নেন মরিস। তৃতীয় উইকেটে অভিজ্ঞ রিজওয়ান ও বাবর আজম ৫৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়ে ২২ গজ ছাড়েন। 

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি স্বাগতিকদের। দলীয় ২০ রানে প্রথম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। নাসিম শাহর বলে উইকেটের পেছনে রিজওয়ানকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জ্যাক ফ্রেজার ম্যাককার্গ। এর ১৬ রান পর অ্যারন হার্ডিকে তুলে নেন আরেক পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি। দলীয় ৫০ পেরুনোর পর জস ইংলিশকে তুলে নেন নাসিম শাহ। এটি ছিল ম্যাচে তার দ্বিতীয় উইকেট। 

চতুর্থ উইকেটে ম্যাথিউ শর্ট ও কুপার কনোলি জুটি গড়ার চেষ্টা চালান। কিন্তু দলীয় ৭২ রানে শর্টকে ইরফানের ক্যাচ বানিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান হারিস রউফ। দলীয় ৭৯ রানে রিটায়ার্ড হার্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন কনোলি। একই রানে হারিস রউফের বলে রানের খাতার খোলার আগেই সাইম আইয়ুবকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ম্যাক্সওয়েল। 

দলীয় ৮৮ রানে মার্কাস স্টয়নিসকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান মোহাম্মদ হাসনাইন। সপ্তম উইকেটে অ্যাডাম জাম্পা ও শ্যান অ্যাবট ৩০ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ১১৮ রানে জাম্পাকে সাইম আইয়ুবের ক্যাচ বানিয়ে ফেরত পাঠান নাসিম শাহ। ম্যাচে এটি নাসিমের তৃতীয় উইকেট। 

২২ রান যোগ করার পর দলীয় ১৪০ রানে শ্যান অ্যাবটকে তুলে নেন শাহিন আফ্রিদি। তার আগে তিনি ৪১ বলে ১ ছক্কা ও ২ চারে ৩০ রান করেন। একই ওভারের ২ বল পর ল্যান্স মরিসকে বোল্ড করেন শাহিন আফ্রিদি। এটি ছিল ম্যাচের তার তৃতীয় উইকেট। 

পাকিস্তানের হয়ে শাহিন শাহ আফ্রিদি ও নাসিম শাহ ৩টি করে উইকেট লাভ করেন। হারিস রউফ ২টি ও হাসনাইন একটি উইকেট তুলে নেন।