শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে পাকিস্তানের বড় জয়
- স্পোর্টস মোমেন্টস
- প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:২৫ AM , আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:০৩ AM

টানটান উত্তেজনার সেই থ্রিলারে এক বল বাকি থাকতে ভারতকে হারালো পাকিস্তান। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে গ্রুপপর্বে হার দিয়েই শুরু হয়েছিল এশিয়া কাপ। সুপার ফোরে এসে যেন সেই হারের প্রতিশোধ নিয়ে নিলো বাবর আজমের দল। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে শেষ ওভার পর্যন্ত জিইয়ে ছিল লড়াই। যাতে শেষ হাসি হাসে পাকিস্তান, এক বল আর ৫ উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেয় আনপ্রেডিক্টেবলরা।
১৮২ রান তাড়া করতে নেমে শেষ দুই ওভারে পাকিস্তানের দরকার ছিল ২৬ রান। ১৯তম ওভারটি অভিজ্ঞ ভুবনেশ্বর কুমারের হাতে তুলে দেন রোহিত শর্মা। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। ভুবনেশ্বরের ওভারের দ্বিতীয় বলে ৯৩ মিটার বড় এক ছক্কা হাঁকিয়ে বসেন আসিফ আলি। চতুর্থ বলে খুশদিল শাহ আর শেষ বলে আসিফ হাঁকান আরেকটি বাউন্ডারি। ফলে শেষ ওভারে মাত্র ৭ রান দরকার পড়ে পাকিস্তানের।
কিন্তু ম্যাচটা যে ভারত-পাকিস্তানের! শেষ ওভারেও চলে তুমুল লড়াই। অর্শদীপ সিংয়ের করা ওভারে দ্বিতীয় বলে আসিফ আলি বাউন্ডারি হাঁকালে ৪ বলে মাত্র ২ দরকার পড়ে পাকিস্তানের। কিন্তু পরের দুই বলে এক রানও নিতে পারে না পাকিস্তান। বরং আসিফ আলি (৮ বলে ১৬) পড়েন এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে। ২ বলে ২ দরকার পড়ে পাকিস্তানের। পুরো স্টেডিয়ামে তখন পিনপতন নীরবতা। যে কোনো কিছুই ঘটতে পারতো। নতুন ব্যাটার ইফতিখার আহমেদ যে স্ট্রাইকে। তবে সব উত্তেজনার আগুনে জল ঢেলে দিয়েছেন ইফতিখার। নিজের মোকাবেলা করা প্রথম বলটিই সোজা উইকেটের দিক দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে দেন তিনি। পাকিস্তান মাতে জয়ের উল্লাসে।
দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বড় রান তাড়ায় নেমে অবশ্য শুরুটা তেমন ভালো ছিল না পাকিস্তানের। বাবর আজম আর মোহাম্মদ রিজওয়ান ২২ বলে তোলেন মাত্র ২২ রান। টানা তৃতীয় ম্যাচে ব্যর্থতার পরিচয় দেন পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। আগের দুই ম্যাচে করেছিলেন ১০ আর ৯। এবার ১০ বলে ১৪ রান করেই সাজঘরে ফেরেন তিনি।
রবি বিষ্ণুইয়ের ঘূর্ণিতে ইনিংসের চতুর্থ ওভারে মিডউইকেটে সহজ ক্যাচ তুলে দেন বাবর। তবে ২২ রানে প্রথম উইকেট হারানো পাকিস্তান পাওয়ার প্লেতে খুব একটা খারাপ করেনি। ৬ ওভারে তোলে ৪৪ রান। ফাখর জামান ফিল্ডিংয়ে শেষ ওভারে দুটি বাউন্ডারি দিয়েছিলেন। ব্যাটিংয়ে নেমেও সুবিধা করতে পারেননি তিনি। ইনিংসের নবম ওভারে ইয়ুজবেন্দ্র চাহালকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লংঅনে ধরা পড়েন এই বাঁহাতি (১৮ বলে ১৫)।
তবে এরপর ঝড়ো এক জুটি গড়েন মোহাম্মদ রিজওয়ান আর মোহাম্মদ নওয়াজ। ৪১ বলে তাদের ৭৩ রানের জুটিতে ম্যাচ অনেকটাই পাকিস্তানের পক্ষে চলে আসে। ৩৭ বলে ফিফটি তুলে নেন রিজওয়ান। নওয়াজ এগোচ্ছিলেন আরও বিধ্বংসী গতিতে। ২০ বলে ৬ চার আর ২ ছক্কায় ৪২ রানের ইনিংস খেলা এই অলরাউন্ডারকে শেষ পর্যন্ত ফেরান অভিজ্ঞ ভুবনেশ্বর কুমার। ১৬তম ওভারে লংঅফ বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন নওয়াজ। রিজওয়ান তবু দারুণ খেলছিলেন। ২০ বলে তখন দরকার ৩৫। হার্দিক পান্ডিয়াকে তুলে মারতে গেলেন পাকিস্তানি উইকেটরক্ষক। লংঅফে উঠে গেলো ক্যাচ। ৫১ বলে ৬ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় ৭১ করে রিজওয়ান ফেরার পরই জমে উঠে ম্যাচ।
এর আগে এশিয়া কাপে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ফিফটি তুলে নেন বিরাট কোহলি। গ্রুপপর্বে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৪ বলে ৩৫ করে সমালোচিত হয়েছিলেন। হংকংয়ের বিপক্ষেই ফেরেন স্বরূপে, করেন ৪৪ বলে অপরাজিত ৫৯।
ফের পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়ে ৪৪ বলে ৬০ রানের ইনিংস খেললেন কোহলি। তার এই ইনিংসে ভর করেই ৭ উইকেটে ১৮১ রানের বড় সংগ্রহ পায় ভারত।