ঢাবির হলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে রাতভর সংঘর্ষ, আহত ২০
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:১৯ PM , আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:১৯ PM

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে রুম দখলকে কেন্দ্র করে রাতভর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের ২০ জনের অধিক আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে।
ছাত্রলীগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ইনানের অনুসারী ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসিব মুক্তের অনুসারীদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের গ্রুপের মধ্যে রুম দখলকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে আনোয়ার-মু্ক্ত গ্রুপের ১৫ জন ও সৈকত গ্রুপের ৯ জন আহত হন বলে তাদের দাবি।
আহত সৈকতের অনুসারীরা হলেন -জিওগ্রাফি বিভাগের ইমামুল হাসান, এপ্লাইড ম্যাথের মাহমুদুল হাসান, পারভেজ, রিদওয়ানুর, মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের কল্লল, কাউসার ও সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের শাহেদ। এরমধ্যে পাঁচজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মুর্তজা মেডিকেল সেন্টার থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে ইমামুল হোসেন নামে একজন গুরুতর আহত বলে জানা যায়।
হল সূত্রে জানা যায়, তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী পারভেজ নামের এক কর্মীকে ৫০০৬ নং রুম থেকে বের করে সেটিতে তালা লাগিয়ে দেয় সাদ্দাম ও ইনানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ওই হলের নাঈম-মুক্তের গ্রুপ। পরে সৈকতের নেতা-কর্মীরা তালা ভেঙে রুমে প্রবেশ করে। এ কথা শুনে হল সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নাঈম এবং মুক্তের অনুসারীরা সৈকতের অনুসারীদের মারধর করে ওই কক্ষ থেকে বের করে দেয়। এসময় ১০১৫, ৫০০৬, ৩০১০, ৪০০১, ২০০৪, ৪০১০, ৩০১৪, ২০০৯, ৩০০৮, ২০১৮, ৪০১৮, ৩০০৭ কক্ষগুলোতে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা এবং ভাংচুর করা হয়। এতে সৈকতের প্রায় ৯জনের মতো আহত হয়েছে। হামলাকারীরা ৫০০৬ নং কক্ষে অবস্থান করা পারভেজের মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
হল ছাত্রলীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈমের ভাষ্য, আমি আমার রুমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের ১০ থেকে ১২ জন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে রাতের খাবারের আয়োজন করি। খাওয়া শেষে সবাই রুমে অবস্থান করছিলাম এমতাবস্থায় রাত দেড়টার এ দিকে ৮ থেকে ১০ জন অতর্কিত ভাবে দেশিও অস্ত্রসহ আমার রুমে হামলা করে। হামলা করে দ্রুতই পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তৎক্ষনাৎ তাদেরকে হাতেনাতে ধরে ফেলি এবং তারা স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈকতের নির্দেশে তারা হামলা করেছে। তারা প্রত্যেকেই হল ছাত্রলীগের পদধারী এবং সৈকতের অনুসারী।
’তানভীর হাসান সৈকত বলেন, আমার রাজনীতি করা এক ছেলেকে তারা জোর করে তার রুম থেকে বের করে দেয়। পরবর্তীতে আমার অনুসারীরা তাকে রুমে তুলতে গেলে নাঈম ও মুক্তের অনুসারীরা হামলা করে। এতে আমার ৯ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনের মাথা ফেটে যায়।
এদিকে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। তিনি বলেন, ‘এটা আসলে একটি দুঃখজনক, অপ্রত্যাশিত ও লজ্জাজনক ঘটনা। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রসাশনকে বিষয়টি জানিয়েছি। ছাত্রলীগের মধ্যে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সার্বিক ব্যাপারে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শাহ মো. মাসুম বাংলাদেশ মোমেন্টসকে বলেন, ‘ঘটনার ব্যাপারে অবগত হওয়ার পর হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি সভা ডাকা হয়েছে। সভা থেকে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’