ঢাবিতে ফারসি ভাষা ও পারস্যের সংস্কৃতি বিষয়ক প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত

ক্যাম্পাস
ফারসি ভাষা ও পারস্যের সংস্কৃতি বিষয়ক প্রকাশনা  © টিবিএম ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ‘পারস্যের লোকজ সংস্কৃতি ও উৎসব’ ও ‘ফারসি ব্যাকরণের সহজ পাঠ’— শীর্ষক দুটি বইয়ের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

আজ বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুমিত আল রশিদ রচয়িত বই দুটির প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। ফারসি বিভাগ ও নবান্ন প্রকাশনীর যৌথ আয়োজনের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাবি কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির ভারতবর্ষ ও বাংলার ইতিহাসের সাথে পারস্যের সম্পর্কের ব্যপারে বলেন, পারস্যের একটি বড় ভুমিকা ভারত ও বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে মিশে আছে। যেমন মোগল সম্রাজ্যের শাসকরা পারস্যের পথ ধরেই কিন্তু ভারতবর্ষে এসেছিলেন, জয় করেছেন এবং শাসন করেছেন। আমরা পারস্যের অনেক সুফি সাধক পেয়েছি, এখানে যে নওরোজের (নববর্ষ) কথা হলো, সেটি কিন্তু পারস্যেও বিদ্যমান। এছাড়াও আমরা দৈনন্দিন জীবনে ফারসির অনেক সংস্কৃতি গ্রহণ করেছি। জেনে এবং না জেনে এমন অনেক শব্দ আমরা ব্যবহার করি যা ফারসি থেকে এসেছে। আমাদের দেশের উৎসব সৃষ্টির পেছনে মুল কারিগর হলো উৎপাদন ব্যবস্থা। কারণ আমাদের দেশ কৃষিপ্রধান দেশ।

প্রকাশিত বইদ্বয়ের ব্যপারে তিনি বলেন, পূর্ণতার দিক থেকে বিচার করলে এই অনুষ্ঠান পরিপূর্ণ। বই দুটির লেখক মুমিতকে আমি ধন্যবাদ জানাই। আমাদের এখন কাজ হলো এটা পড়ে পরামর্শ দেয়া। তাতে লেখক ও লেখা উপকৃত হবে৷ বই লেখা অনেক কঠিন কাজ, আর এই কঠিন কাজটি মুমিত করে দেখিয়েছে। আমরা আশা করবো সামনের বছরে তার চারটি বই নিয়ে যাতে আমরা আলোচনা করতে পারি। 

সভাপতির বক্তব্যে ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন ডিনের দেয়া বইয়ের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবের জবাব দেন। তিনি বলেন, ডিন সাহেব যে প্রস্তাব দিয়েছেন, বইটির নামে ‘পারস্যের লোকজ সংস্কৃতি ও উৎসব’ থেকে যেন ‘ইরানের’ নামে পরিবর্তন করা হয়। কিন্তু ‘ইরান’ শব্দটি এসেছে অষ্টম শতকে। আর এই বইয়ে পাঁচ হাজার বছর আগের ইতিহাস ঐতিহ্যও বর্ণিত আছে, তাই আমার মনে হয় এটাই উপযুক্ত।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর সাইয়্যেদ রেজা মীর মোহাম্মদী বলেন, আমি নতুন কালচারাল কাউন্সেলর হিসেবে চেষ্টা করবো ঢাবির ফারসি বিভাগের সাথে আমাদের সম্পর্ক যেন আরো দৃঢ় হয়। পারস্যের জ্ঞান ও আধ্যাত্বিকতার যে জগৎ সেটিতে প্রবেশের দরজা হচ্ছে ফারসি ভাষা। এই ভাষা শিখলে ফারসি সাহিত্যের বড় একটি জগতে প্রবেশ করা যায়, যে জগতের মধ্যে রয়েছে আধ্যাত্বিকতা, শরীয়ত, মারিফত, বিজ্ঞান সহ আরো বিস্তৃত জ্ঞান। ফারসি ভাষার সাথে বাংলাদেশের অনেক পুরোনো একটি সম্পর্ক রয়েছে। এটি চর্চার জন্যে যে দুইটি বই লেখা হলো এর মাধ্যমে আশা করি সবাই মহাজ্ঞানের সেই জগতে প্রবেশ করতে পারবে।  

নবান্ন প্রকাশনীর প্রকাশক আমিনুর রহমান সুলতান বলেন, একজন প্রকাশক হিসেবে আমি মনে করি, তরুণ মুমিত আল রশিদ আন্তর্জাতিক মানের একজন লেখক। তাকে নবান্ন ধারন করতে পেরেছে। ফারসি ভাষা ও পারস্যের সংস্কৃতি নিয়ে আমরা তার দুটি বই প্রকাশ করতে যাচ্ছি।

অনুষ্ঠানে ফারসি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আহসান আল হাদীর সঞ্চালনায় বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগের ভিজিটিং অধ্যাপক ড. মাজিদ পুইয়ান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর হেড ক্রাইম রিপোর্টার রোজিনা ইসলাম এবং দৈনিক জনকণ্ঠের সিনিয়র সাব এডিটর সৈয়দ শমসের।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ