টাকা চাওয়ায় রেস্তোরাঁর মালিককে হলে নিয়ে বেধড়ক মারধর করেছে ঢাবি শিক্ষার্থী

ক্যাম্পাস
  © সংগৃহীত

গতকাল বুধবার (২৬ জুলাই) রাতে ‘বকেয়া টাকা’ চাওয়ায় নিউমার্কেট এলাকার এক রেস্তোরাঁর মালিককে হলে নিয়ে গীয়ে বেধড়ক মারধর করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহনেওয়াজ ছাত্রাবাসের কয়েকজন শিক্ষার্থী। মারধরের শিকার ওই ব্যাক্তির নাম নেয়ামতউল্লাহ। তিনি নিউমার্কেট এলাকার আইয়ুব কলোনিতে রাইস কিং নামে একটি রেস্তোরাঁ চালান। 

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নেয়ামতউল্লাহ বলেন, শাহনেওয়াজ হলের ছাত্ররা বাকি খেয়ে চলে যায়, টাকা চাইলে বিকাশ থেকে তুলে দেবে বলে আর দেয় না। বুধবার এক ছাত্র আমার হোটেলে খাওয়ার পর বিকাশ থেকে টাকা তুলে এনে দেবে বললে আমি বলি, আমাকে সেন্ডমানি করেন। বিল হিসেবে ৯০ টাকা সেন্ডমানি করে সে চলে যায়।

কিছুক্ষণ পর কয়েকজন ছাত্র এসে আমাকে হলের ভেতর নিয়ে যায়। এর আগে দোকানের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে এবং সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। আমাকে হলে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে লাঠি, হকিস্টিক দিয়ে মারধর করে। পরে একটি রুমে নিয়ে ২০ থেকে ২৫ জন মিলে কিলঘুষি মারে। আমি তিনবার অজ্ঞান হয়ে যাই। তারা একাধিক জন আমার মুখে প্রস্রাবও করে। আমার এক আত্মীয় ৯৯৯-এ কল দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম আমাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল নিয়ে যায়।

এ সময় মারধর করা কাউকে চিনতে পারেননি বলে তিনি জানান। ভুক্তভোগী আরও বলেন, ‘আমি ঢাকা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী। আমি এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেব। আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’

এদিকে ঘটনার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সন্ধ্যায় রেস্তোঁরায় বাকি খেতে যাওয়া শিক্ষার্থীর নাম তাওহিদুল ইসলাম। তিনি গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তাওহিদেকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ শাহনেওয়াজ ছাত্রাবাসের ওয়ার্ডেন আব্দুস সাত্তার গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, ওই হোটেল মালিক নাকি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। আজকে এক শিক্ষার্থীকে কলার ধরে শার্ট ছিঁড়ে ফেলছে বলে ছাত্ররা জানায়। শিক্ষার্থীরা তো এভাবে মারধর করতে পারে না, এটার সুন্দর পদ্ধতি আছে। তাকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে বললে কিংবা তাকে শোধরানোর সুযোগ দেওয়া দরকার ছিল। খারাপ আচরণের বিষয়টি আমাদের জানালে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হতো।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী অভিযোগ দিলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন ওয়ার্ডেন। এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বলেন, আমি ঘটনার বিষয়টি শুনেছি। দোকানদার অভিযোগ করেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।