পুলিশ সদস্যদের মারধরের অভিযোগে তিন ববি শিক্ষার্থী আটক
- ববি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৪০ AM , আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৪০ AM

লাইসেন্স বিহীন মোটরসাইকেল আটক করাকে কেন্দ্র করে দুই ট্রাফিক পুলিশ সদস্যকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ১৫-২০ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় মোটরসাইকেলের চালকসহ তিন ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে বরিশাল নগরীর বান্দ রোডে পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সামনের সড়কে হামলার ঘটনা ঘটে। এদিন রাত সাড়ে ১১টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
হামলার সময় পুলিশের ওয়ারলেস ছিনিয়ে নিয়ে ভাঙচুর, বডিঅন ক্যামেরা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। আহতরা শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহত দুই পুলিশ সদস্য হলেন সার্জেন্ট মনিরুল ও কনস্টেবল মোস্তফা জামাল।
এই ঘটনায় উল্টো পুলিশের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ এনে ববি শিক্ষার্থীরা ঢাকা-পটুয়াখালী মহাসড়কে ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় তারা পুলিশ হেফাজতে থাকা শিক্ষার্থীদের মুক্তি দাবি করেন।আটক শিক্ষার্থীরা হলেন- হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আনভির ইসলাম ও রমজান হোসেন সোহাগ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সোয়া সাতটার দিকে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি গেটের সামনে সার্জেন্ট মনিরুল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইছাত্র বহনকারী একটি মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। তখন গাড়ির কোন কাগজপত্র না থাকায় মামলা দিয়ে গাড়িটি আটক করে ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মনিরুল। তখন একজন পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলে, 'আজকে পুলিশ পিটাবো'। এই কথা বলে তারা ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যায়।
পরে রাত সোয়া আটটার দিকে ১৫-২০ জন ছাত্রকে নিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায় তারা। হামলার ঘটনার সময় সার্জেন্ট মনিরুল ও কনস্টেবল মোস্তফা জামাল পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ের সামনে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সার্জেন্ট মনিরুলের ওয়ারলেস কেড়ে নিয়ে তা দিয়ে মনিরুলকে মারধর করে। এ সময় পুলিশ সদস্য মনিরুলের বডি অন ক্যামেরাও ছিনিয়ে নেয় তারা।
এই ঘটনার ভিডিও করার অপরাধে কনস্টেবল মোস্তফাকেও বেদম মারধর করে তারা।
এদিকে থানা হেফাজতে থাকা ছাত্রদের মুক্তির দাবিতে রাত ৯ টা থেকে ঢাকা-পটুয়াখালী মহাসড়ক ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ করে ববি শিক্ষার্থীরা। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে দূরপাল্লার যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। ঘটনাস্থলে বন্দর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান মুকুলসহ তার দল উপস্থিত হয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বরিশাল ট্রাফিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, আটক গাড়ির কোন কাগজপত্র ছিলো না। এছাড়া চালকের মাথায় হেলমেট ও লাইসেন্স ছিলোনা। তাই নিয়ম অনুযায়ী মোটর সাইকেল আটক করা হয়েছে। হামলায় সার্জেন্ট মনিরুল ও কনস্টেবল মোস্তফা গুরুতর আহত হয়েছে। এসময় পুলিশের বডি অন ক্যামেরা ও ওয়ারলেস সেট নিয়ে গেছে।
কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন রাত সাড়ে ১১টায় জানান, এই ঘটনায় তিন ছাত্রকে পুলিশ নিজ হেফাজতে নিয়েছে। ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।