পাঁচ দফা দাবিতে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার শিক্ষকদের কর্মবিরতি
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৩, ০২:৩৯ PM , আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৩, ০৩:৩৯ PM

ক্যাডার কম্পোজিনের সুরক্ষা এবং আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনসহ ৫ দফা দাবি আদায়ে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করছেন রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষকরা।
আজ সোমবার (২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে দশটায় কলেজ গেটে এ কর্মসূচি শুরু হয়। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (১ টা ৫০) তাদের আন্দোলন চলমান ছিল। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির ইডেন মহিলা কলেজ ইউনিট এ কর্মসূচির আয়োজন করে। তাদের অপর ৩টি দাবি হলো পদোন্নতি, পদসৃজন এবং স্কেল আপগ্রেডেশন।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান, সরকারি কলেজ সমূহে উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চ শিক্ষা স্তরে প্রায় ৫০ লাখ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষকের পদ সৃজন অপরিহার্য। বর্তমানে সরকারি কলেজসহ শিক্ষা প্রশাসনে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডারে কর্মরত ১৬ হাজার কর্মকর্তার বাইরে আরও ১২ হাজার ৪৪৪টি পদ সৃজনের প্রস্তাব করা হয়। ৯ বছর আগের সেই প্রস্তাব আজও বাস্তবায়ন করা হয়নি।
তারা আরো বলেন, বিসিএস কম্পোজিশন এবং ক্যাডার রুলস অনুযায়ী প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষাস্তর সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের নবম গ্রেডের উপরে সকল পদ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভুক্ত। এসব পদে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা বাদে অন্য কারও পদায়নের সুযোগ নেই। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ৫১২টি পদ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিল বহির্ভূত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগ বিধি চুড়ান্ত করা হয়েছে। এটি সুস্পষ্টভাবে শিক্ষা ক্যাডারের অস্তিত্বের ওপর আঘাত।
শিক্ষা খাতে ৪র্থ গ্রেডের উপর কোন পদ নেই। অন্য ক্যাডার কর্মকর্তারা পঞ্চম গ্রেড হতে তৃতীয় গ্রেডে পদোন্নতি পান। কিন্তু শিক্ষা ক্যাডারে অধ্যাপক পদটি সর্বোচ্চ হলেও সেটিকে চতুর্থ গ্রেডে রাখা হয়েছে। এটিকে তৃতীয় গ্রেডে উন্নীত করা এবং আনুপাতিক হারে প্রথম ও দ্বিতীয় গ্রেডের পদ সৃষ্টি করার দাবি জানান আন্দোলনরত শিক্ষকরা।
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক খায়রুল বাশার খান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গুণগত শিক্ষার কথা বলেন কিন্তু সেই শিক্ষার একটি রেশিও আছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পর্যাপ্ত টিচার থাকলেও আমাদের কলেজগুলোতে নেই। আজ থেকে ৯ বছর আগে ১২ হাজার ৪৪৪ টি পদ তৈরি করার জন্য বলা হয়েছিল কিন্তু এখন এসে বলতেছে পদ তৈরি করা যাবে না। এতে করে আমাদের প্রমোশনের ক্ষেত্রে পদ সংখ্যা কমে গেল। আমাদের ৩ হাজার সহকর্মী সহযোগী অধ্যাপক হওয়ার কথা সেখানে মাত্র ৬৯০ জনকে করা হয়েছে। অনেকেই নয় থেকে দশ বছর ধরে সহকারী অধ্যাপক পদে কর্মরত আছেন। সব ক্যাডারে পদোন্নতি হচ্ছে কিন্তু আমাদের প্রতি বছর না হয়ে দুই তিন বছর পর পর পদোন্নতি হচ্ছে।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, সবদিক থেকেই আমাদের সমস্যা। আমি ৩৬ তম বিসিএস-এর একজন ক্যাডার কর্মকর্তা। পাঁচ বছর থেকে প্রভাষক পদে কর্মরত আছি। আমার ব্যাচের যারা অন্যান্য কাডারে কর্মরত আছেন তাদের অনেকেই ষষ্ঠ গ্রেডে প্রমোশন পেয়ে গেছেন। এমনকি আমাদের যারা সিনিয়র আছেন ২৮, ২৯ তম ক্যাডারের তারাও এখনো প্রভাষক পদেই আছেন। ১২ থেকে ১৩ বছর এই পদে চাকরি করতেছেন কিন্তু কোন পদোন্নতি পাচ্ছেন না তারা। আর একটা সমস্যা হচ্ছে আমাদের জন্য পদ সৃষ্টি করা হচ্ছে না যেটা নয় বছর থেকে ঝুলে আছে। মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর নামে একটি অধিদপ্তর ছিলো যেখানে আমাদের জন্য কিছু পদ ছিলো সেগুলো হাতছাড়া হয়ে গেছে। এছাড়াও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর যেটা বর্তমানে প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সেখানে আমাদের জন্য প্রায় ৫০০ পদ ছিলো সেটাও নতুন বিধি করে আমাদের বের করে দেয়া হয়েছে।
এদিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষকরাও সকাল এগারোটায় কলেজ শহীদ মিনারের সামনে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করে।