জাবিতে মদ্যপ নারীকে আটক প্রশাসনের, 'ছাড়িয়ে নিলেন' শিক্ষক
- আশরাফুল , জাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:২০ PM , আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:০৩ PM

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও গার্ডদের সাথে মদ্যপ অবস্থায় অসদাচরণের অভিযোগে বহিরাগত দুই নারীকে আটক করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে যান।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের (ডেইরি গেইট) সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার কক্ষে বিষয়টি মিমাংসা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারের এক কর্মকর্তার মেয়ের বিয়ের দাওয়াতে আসেন ওই দুই নারী। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বেপোরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের হচ্ছিলেন তারা। এ সময় প্রধান ফটকের দায়িত্বরত গার্ড তাদের পথরোধ করেন। তখন তাদের গাড়িচালক গার্ডদের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গার্ডকে আঘাত করেন।
এরপর গাড়ি থেকে বের হয়ে অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন ওই দুই নারী। তারা গার্ডদের সাথে ঔদ্ধত্য আচরণ করেন, তখন ঘটনাস্থলে এক বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পরে খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে, তাদের সাথেও বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফি তাদের বাবার বন্ধু বলে পরিচয় দেন ওই দুই নারী। এরপর তাদের নিরপত্তা শাখায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে নিরাপত্তা শাখায় নেওয়ার কিছুক্ষণ পর সেখানে অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফি, প্রক্টর আ.স.ম ফিরোজ-উল-হাসান ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন উপস্থিত হন। পরে ওই দুই নারীকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, 'গাড়িতে অবস্থানরত অভিযুক্ত দুই নারী মধ্যপ অবস্থায় ছিলো। তারা গাড়ি থেকে নেমে আমাদের দায়িত্বরত গার্ডদের সাথে আক্রামণাত্মক আচরণ করে। একজনকে মেরে আহতও করে তাদের গাড়িচালক। পরে তাদেরকে নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে আসলে, এক শিক্ষক এসে কোনো ধরণের আলোচনা ছাড়াই তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে যান।'
এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ হেল কাফী বলেন, 'তারা আমার আত্মীয় না। তারা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩তম ব্যাচের এক সাবেক শিক্ষার্থীর অতিথি। তারা বিয়ের দাওয়াতে এসেছিলো। নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও গার্ডদের সঙ্গে ঝামেলা হওয়ার পর ওই সাবেক শিক্ষার্থী আমাকে ফোন দেন, তখন আমি গিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করে দেই। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও জাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।'
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ.স.ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, 'বন্ধের দিনগুলোতে ক্যাম্পসে বহিরাগতদের প্রবেশের ফলে নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। সামনের দিনগুলোতে বহিরাগত নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর অবস্থান নিতে হবে। আজকের ঘটনা শুনে নিরাপত্তা শাখায় গেছিলাম, পরে একজন শিক্ষকের মধ্যস্ততায় বিষয়টি মিমাংসা হয়।'