জাবি ছাত্রলীগের ৪০০ জনের কমিটিতে ছাত্রত্ব নেই ৬৭ শতাংশের

জাবি
  © লোগো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির পদধারীদের একটি বড় অংশের ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে। এমনকি মাস্টার্সে অকৃতকার্য হওয়ার অছাত্রদের সেই তালিকায় স্থান পেয়েছেন কমিটির সভাপতি –সাধারণ সম্পাদক। এর পরও বিশেষ ছাত্রত্ব দেখিয়ে রাজনতি করেছেন তারা। তার ওপর সংগঠনের গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে কমিটিতে রাখা হয়েছে ৪০০ জনের উপরে নেতাকর্মীকে। এদের মধ্যে বর্তমানে ২৭০ জনের উপরে ছাত্রত্ব নেই । 

কমিটিতে ৪২ তম ব্যাচের ২ জন রয়েছে। এর মধ্যে সভাপতি একজন। যিনি বিশেষ ছাত্র। মাস্টার্সে ফেল করে দলে আছেন। ৪৩ তম ব্যাচের ৩২ জন। এর মধ্যে সাধারণ সম্পাদক রয়েছে। তিনিও মাস্টার্সে ফেল করা বিশেষ ছাত্র।  

কমিটি ৪৪ তম ব্যাচের ৬৫ জন, ৪৫ তম ব্যাচের ৭৯ জন, ও ৪৬ তম ব্যাচের ৯২ জন অছাত্র রয়েছেন।এর মধ্যে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক নিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, ও ছাত্রলীগের কর্মী হাসানও রয়েছেন। 

আরও পড়ুন: ২০ বছরেও পাননি বেতন, শিক্ষিকার লাশ নিয়ে স্কুল মাঠে স্বজনরা 

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী সবোর্চ্চ ৬ বছরে স্নাতক ও ২ বছরে স্বাতকোত্তর  পরিক্ষা শেষ করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে আট বছরে পড়াশোনা শেষ করতে না পারলে ভিসি বিশেষ বিবেচনায় পরিক্ষা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এটাই কাজে লাগায় ছাত্রলীগ।তখন তিনি আর নিয়মিত ছাত্র হিসেবে বিবেচিত হবেন না।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের তথ্য মতে,৪৬ ব্যাচের দুই একটি বিভাগ ছাড়া অধিকাংশ বিভাগের ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে। ৪৭ ব্যাচেরও কয়েকটি বিভাগের স্নাতকোত্তর পরিক্ষা সমাপ্ত  ও রেজাল্ট হয়েছে।

বিভাগীয় সুত্র জানা যায়, জাবি ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের ভর্তি হন ২০১২-১৩ সালে। সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন দর্শন বিভাগে ভর্তি হন ২০১৩-২০১৪ ব্যাচে পোষ্য কোটায় । তিনিও মাস্টার্সে ফেল করা শিক্ষার্থীদের তালিকায় রয়েছেন। এতে করে নিয়মিত শিক্ষার্থীর পদ থেকে বাদ পড়েছেন তারা। ২০২২ সালের ৩ জানুয়ারি ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়। এরপর ৩০ নভেম্বর কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়।গঠনতন্ত্র অনুয়ায়ি ১২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষনা করার নিয়ম থাকলেও কমিটির সদস্য সংখ্যা দাড়ায় ৪০০ জনের উপরে। এদেরে মধ্যে প্রায় ২৭০ জনের উপরে ছাত্রত্ব নেই। অন্যদিকে যারা আছেন এদের অনেকই পরবর্তী কমিটিতে পদ পাওয়ার আশায় ফেইল পড়ে ছাত্রত্ব টিকিয়ে রেখেছে।

এদিকে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনকে একাধিক বার ফোন করা হলেও কল ধরেনি 

সার্বিক বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ছাত্রলীগের অন্যায়, অপকর্মে জড়িত থাকার সুযোগ নেই। যারা ছাত্রলীগ থেকে ছাত্রত্ব শেষ হয়ে গেছে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের নিয়ম মান্য করে দ্রুত হল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো।