রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ধ্রুপদী সংগীতের পুনর্জাগরণ

রবীন্দ্র
  © টিবিএম ফটো

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকর্মকে জাতির মানসে চির অম্লান রাখতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে প্রতিষ্ঠিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ণাঢ্যভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ক্ল্যাসিক্যাল কনফারেন্স অন মিউজিক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: শাহ্ আজমের সভাপতিত্বে আজ সকাল ১১টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় কনফারেন্সের প্রথম অধিবেশন। এসময় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য ও বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী জনাব চয়ন ইসলাম। কনফারেন্স বক্তা হিসেবে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খ্যাতিমান সংগীতজ্ঞ জনাব শেখ সাদী খান।  দুপুর ১২.৪৫ টায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পরিবেশনা করেন মনোমুগ্ধকর ধ্রুপদী সংগীত। এরপর বিকাল সাড়ে তিনটায় 'বাংলা গানের পূর্বাপর: প্রসঙ্গ শাস্ত্রীয় সংগীত' শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। 

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্সে প্রাবন্ধিক হিসেবে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের অধ্যাপক ড. অসিত রায়। সন্ধ্যায় দেশ-বিদেশের সংগীত বিশেষজ্ঞদের শাস্ত্রীয় সংগীতের পরিবেশনায় ছিল ধ্রুপদ (রাগ ভূপালী), খেয়াল (রাগ মুলতানি), তবলা লহড়া, বীণা বাদন এবং উচ্চাঙ্গ সংগীত। প্রখ্যাত বীণাশিল্পী পণ্ডিত বিশখ শীলের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় কনফারেন্সের প্রথম দিনের কর্মসূচি। 

কনফারেন্স সভাপতি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর  শাহ্ আজম বলেন, মহান স্বাধীনতার মাসে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি বাঙালি জাতির পিতা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, তাঁর নেতৃত্বে আমরা যেমন স্বাধীন ভুখণ্ড পেয়েছি তেমনি সাংস্কৃতিক পরিচয় লাভ করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা আজ যে আন্তর্জাতিক ক্লাসিকাল মিউজিক সম্মেলনের আয়োজন করেছি তার পশ্চাতে রয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতা। জননেত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা-গবেষণা ও সংস্কৃতিকে তৃণমূলে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। 

রবীন্দ্র উপাচার্য শাহ্ আজম আরো বলেন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকর্মকে জাতির মানসে চির অম্লান রাখার মহৎ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমবারের মতো দুইদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ক্লাসিকাল মিউজিক কনফারেন্সের আয়োজন করেছে। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাংসদ চয়ন ইসলাম বলেন, শাহজাদপুরের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবী ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা। এই দাবী পূরণ করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা বর্তমান বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। আমাদের প্রত্যাশা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা-গবেষণার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার মাধ্যমে দেশের শীর্ষ সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে তার স্থান দখল করবে। ধ্রুপদী সংগীতের উপর বৃহৎ পরিসরে আন্তর্জাতিক কনফারেন্স আয়োজনের জন্য তিনি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর শাহ্ আজমের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

উল্লেখ্য, কনফারেন্সের দ্বিতীয় দিনে সকাল ১০টায় কর্মসূচি শুরু হবে কন্ঠসংগীত ও তবলা বাদন কর্মশালার মধ্যদিয়ে। কর্মশালায় প্রশিক্ষক হিসাবে থাকবেন পণ্ডিত শ্যামসুন্দর গোস্বামী (কলকাতা, ভারত), শুভ্রাংশু চক্রবর্তী (কলকাতা, ভারত) এবং সন্ধ্যায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের  পরিবেশনার মধ্যদিয়ে শেষ হবে এ কনফারেন্স।


মন্তব্য