জবি ছাত্রীর আত্মহত্যায় জড়িতদের শাস্তি দাবি

জবি
  © সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যায় জড়িতদের দ্রুত শাস্তির দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মানববন্ধন করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্লাটফর্ম 'নিপীরণ বিরোধী মঞ্চ'।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড উল্লেখ করে ঘটনার পেছনে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গাফিলতি ও তাদের স্বেচ্ছাচারী মনোভাব পরিহার করার দাবি জানান। এ সময় দেশের সর্বস্তরে নারীর অধিকার ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার দাবিও জানান তারা।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী তৌহিদ শিকদার বলেন, ফাইরুজ অবন্তিকা হত্যাকাণ্ডটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা না। গত ২ বছর ধরে সে নিপীড়িত হয়ে আসছিল। এই নিপীড়নের দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির। বিশ্ববিদ্যালয়ে্র সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক দ্বীন ইসলাম সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অপকর্মের অভিযোগ। ক্ষমতাসীন দলের বলে এসব ক্ষেত্রে বিচারের দাবি নিয়ে গেলে প্রশাসন থেকে সুষ্ঠু বিচার পাওয়া যায় না। ফলে হাজারও ফাইরুজ অবন্তিকার বিচার ক্ষমতার নিচে ধামাচাপা পড়ে যায়। এদের বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করে স্বাধীন সার্বভৌম দেশের ভারসাম্য রাখতে হবে।

ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনতে হবে। কারণ, শিক্ষক নিয়োগে ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় গুন্ডাদের নিয়োগ দিয়ে পরিবর্তীতে তাদেরই শৃংখলা রক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে রক্ষকই হয়ে যাচ্ছে ভক্ষক। সুতরাং, এমন শিক্ষকের দ্বারা এসব ঘটনা ঘটবে, এটাই স্বাভাবিক। 

তিনি বলেন, অবন্তিকাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। যেটাকে  কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড বলা হয়। আজকে এ ধরণের কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড প্রতিনিয়তই ঘটছে। আমরা প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস নিরাপদ, নিপীড়ন মুক্ত, নির্যাতন মুক্ত ও এমন কাঠামোগত হত্যাকান্ড মুক্ত করতে চাই। 

তিনি আরও বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদিবাদের সংস্কৃতি ছিল, আছে এবং থাকবে। ইতঃমধ্যে ধর্ষণ,নিপীড়ন ও মাদকের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলনে সফলতাও এসেছে। তবে এই সফলতার ধারা অব্যাহত রাখতে এবং নিপীরকদের বিরুদ্ধে ঢাল হয়ে দাঁড়াতে হাল ছাড়লে চলবে না। সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাজপথে থাকেত হবে।

উল্লেখ্য, গত ১৫ মার্চ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ফাইরুজ অবন্তিকা নামে এক শিক্ষার্থী প্রক্টর ও সহপাঠীকে দায়ী করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। মৃত্যুর আগে দেয়া দীর্ঘ একটি পোস্টে তিনি এ ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে দায়ী করেছেন। এ ঘটনায় উত্তপ্ত ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে গত ১৫ মার্চ রাতে সাময়িক ভাবে বহিস্কার করা হয় অভিযুক্ত শিক্ষক ও সহপাঠীকে। 


মন্তব্য