জাবির শিক্ষক সমিতির বৈষম্যমূলক পেনশন প্রত্যাখান

জাবি
  © সংগৃহীত

গত ১৩ মার্চ (বুধবার) বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় প্রদত্ত সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাহারে দৃঢ় অবস্থান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শিক্ষক সমিতি। 

শুক্রবার (২২ মার্চ) শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মোতাহার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. শাহেদ রানা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।

বিবৃতিতে পেনশন সংক্রান্ত এ প্রজ্ঞাপনকে 'অগ্রহনযোগ্য' উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ১৩ মার্চ (বুধবার) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত এই প্রজ্ঞাপন আমাদের নিকট বৈষম্যমূলক, হতাশাসৃষ্টিকারী ও অগ্রহণযোগ্য হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে। 

এতে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। উপরন্তু, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে এর আওতাভুক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষকতার পেশাকে রীতিমতো অবমাননা করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। আর এই বিদ্যাপীঠসমূহে যাঁরা শিক্ষকতায় আছেন, তাঁরা দেশগঠন ও জাতির মেধা বিকাশের অনন্য রূপকার। অথচ তাঁদেরকে এই ধরনের বৈষম্যমূলক পেনশনের আওতায় নিয়ে আসা সংক্রান্ত এই পরিকল্পনা ও প্রজ্ঞাপন আমাদের মাঝে চরম হতাশা ও অসন্তুষ্টি সৃষ্টি করেছে। এই প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়িত হলে যেমন মানসিক ও আর্থিক দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ, তেমনি ভবিষ্যতে মেধাবীরা আগ্রহ হারাবে এই পেশার প্রতি।

বিবৃতিতে আরোও বলা হয়,  আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্ব ও সম্মান দিয়েছিলেন। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা হয় তাঁর হাত ধরেই। তাঁর সুযোগ্য কন্যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন পিতার আদর্শের পথ ধরেই। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে, নতুন সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তিনিও গুরুত্ব দিয়ে চলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার প্রতি। আর তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়নে অন্তরায় সৃষ্টি করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য এই ধরনের বৈষম্যমূলক সার্বজনীন পেনশন পরিকল্পনা। আমরা ধারণা করি, জননেত্রীর ধারাবাহিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে ও দেশকে মেধাশূন্য করতেই এ ধরনের প্রজ্ঞাপনের অবতারণা।

এই প্রজ্ঞাপন দ্রুত প্রত্যাহার করা না হলে আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এ সংগঠন।

উল্লেখ্য, গত ১৩ মার্চ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, সব স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীনস্থ অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোর চাকরিতে যেসব কর্মকর্তা বা কর্মচারী, তারা যে নামেই হোন না কেন, আগামী ১ জুলাই ও তৎপরবর্তী সময়ে নতুন যোগদান করবেন, তাদের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত করা হলো।


মন্তব্য