তীব্র তাপদাহে পুড়ছে পাবিপ্রবি, সতর্ক থাকার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

পাবিপ্রবি
  © সংগৃহীত

সম্প্রতি দেশব্যাপী তীব্র তাপদাহের ফলে দেশের বিভিন্ন স্কুল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ও অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে(পাবিপ্রবি) ক্লাস পরীক্ষা সশরীরেই চলমান রয়েছে। ফলে দুর্বিষহ গরমে ক্যাম্পাসে নাভিশ্বাস উঠেছে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের। 

ক্লাস করতে আসা একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়। কেউ কেউ মনে করছে সদ্য ঈদের ছুটি কাটিয়ে আসার পর এখন ক্লাস পরীক্ষা সঠিকভাবে না চলমান রাখলে একাডেমিকভাবে পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকবে। আবার কেউ তার উল্টোটা বলছেন। তাদের দাবি এই গরমে ক্লাস পরীক্ষায় অংশ নেয়া মৃত্যু ঝুঁকিতে ফেলে দিবে। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে হিটস্ট্রোকে মৃত্যুর খবরও পাওয়া যাচ্ছে। ক্লাস করতে আসা ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির ইসলাম জানান,এই আবহাওয়ায় ক্যাম্পাসে এসে ক্লাস করা খুবই কঠিন হয়ে যাচ্ছে।  আর্দ্রতা কম থাকার কারণে প্রচুর পানি খাওয়া সত্ত্বেও বারবার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গনিত বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে একাডেমিক ভবন পর্যন্ত হেঁটে পৌঁছাতে মনে হয় মাথার উপর সূর্য যেন আগুন ঢেলে দিচ্ছে। এই সড়কে মিলে না একটুও গাছের ছায়া"

ভৌগোলিক বৈশিষ্টের কারণে মূলত পাবনা ও আশেপাশের অঞ্চলের তাপপ্রবাহ বেশি হয়। আবহাওয়াবিদ গন বেশ কিছু কারণ চিহ্নিত করলেও প্রধান কারণ হিসাবে তারা বলেছেন, "সূর্য থেকে এ অঞ্চলের অবস্থান। সূর্যের উত্তরায়নের কারণে তাপমাত্রা বাড়ে। পৃথিবী সাড়ে ২৩ ডিগ্রি কোণে সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। ফলে ২১শে মার্চের পর থেকে ২১শে জুন পর্যন্ত উত্তর মেরুতে সবচেয়ে বেশি সূর্যের তাপ পৌঁছায়। আর বাংলাদেশ যেহেতু ২২ ডিগ্রি থেকে ২৬ডিগ্রি এরকম অবস্থানে আছে এবং কেন্দ্র রয়েছে ২৩ ডিগ্রির কাছাকাছি। ফলে সূর্যের যে সর্বোচ্চ কিরণ সেটা মূলত পড়ে এই সব অঞ্চলে।আর একটি বড় কারণ যেটি উল্লেখ না করলেই নয়, বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয়বাষ্প এই অঞ্চল দিয়ে প্রবেশ করে বলে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অন্যান্য এলাকার তুলনায় এই এলাকায় বেশি থাকে। ফলে তাপমাত্রাও বেশি থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. রাহিদুল ইসলাম বলেন, তাপদাহ কমাতে বৃক্ষরোপন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি সেগুলোর নিয়মিত পরিচর্যাও করা দরকার। ক্যাম্পাসে পানি ছিটিয়ে তাপমাত্রা সাময়িক হ্রাস করা যায়। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের চিফ মেডিক্যাল অফিসার ডা. রফিকুল ইসলাম জানান, তীব্র গরমে দেহে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। তাই প্রচুর নিরাপদ পানি পান করতে হবে।তবে শিক্ষার্থীদের  খোলা শরবত এড়িয়ে চলাই উত্তম। আর হিটস্ট্রোক মূলত চল্লিশোর্ধ্ব মানুষের বেশি হলেও তরুণদেরও সর্তক থাকতে হবে। বাইরে বের হলে একদম খোলা রোদে না থেকে ছায়াযুক্ত স্থানে থাকতে হবে। আর অবশ্যই ছাতা ক্যারি করা উচিত। পাশাপাশি সুতি ঢিলাঢালা পোষাক পরিধান করতে হবে। এছাড়া ক্যাম্পাসে সরাসরি যারা কায়িক শ্রমে জড়িত তাদের প্রতি বিশেষ নজর ও তাদের এ বিষয়ে সর্তক করার পরামর্শ দেন চিফ মেডিকেল অফিসার।


মন্তব্য