১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা 

ঢাবি
  © ফাইল ছবি

আগামী ২৪ জুনের মধ্যে 'প্রত্যয় স্কিম' সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে বাংলাদেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা  ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাবেন।

মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুর ১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতারা।

শিক্ষক নেতারা জানান, আগামী ২৫, ২৬ ও ২৭ জুন অর্ধদিবস ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন শিক্ষকরা। তবে পরীক্ষাসমূহ কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে। এরপরও দাবি বাস্তবায়ন না হলে আগামী ১ জুলাই থেকে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে বলে জানান সংগঠনটির নেতারা।

ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম এবং  মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া এক লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ১৩ মার্চ প্রজ্ঞাপন জারি করার পর থেকে শিক্ষকরা অদ্যাবধি নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। শিক্ষার্থীদের ক্লাস, পরীক্ষা কোনোভাবেই যেন বিঘ্নিত না হয়, সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে অনেকটা প্রতীকী কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে এ বিষয়ে সরকারের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণের সব ধরনের চেষ্টা করা হয়েছে। বিবৃতি প্রদান, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান এবং অবস্থান কর্মসূচির মত শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হলেও এখনও পর্যন্ত সরকারের তরফ থেকে কোনো ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। শিক্ষকদের সাথে দায়িত্বশীল কোনো পক্ষ যোগাযোগও করেননি।

তারা জানান, এই অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-সমাজের মধ্যে চরম হতাশা এবং ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রস্তাবিত 'প্রত্যয়' স্কিম বাস্তবায়ন হলে বর্তমান শিক্ষার্থী, যারা আগামী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার মত মহান পেশায় আসতে আগ্রহী, তারাই এর ভুক্তভোগী হবেন। কাজেই বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের চলমান আন্দোলন আগামী দিনের তরুণ সমাজের স্বার্থরক্ষা তথা উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে। আমরা এখনও আশা করি শিক্ষক সমাজকে যারা সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছেন তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। অন্যথায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের চলমান প্রতীকী কর্মসূচি সর্বাত্মক আন্দোলনে পরিণত হবে।

অন্যান্য শিক্ষক নেতারা বলেন, এটা আমাদের বাঁচা মরার লড়াই। আমরা সরকার বিরোধী কোনো আন্দোলন করছি না। মেধাবীদের অধিকার আদায়ের লড়াই এটা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পহেলা জুন থেকে কোনো ক্লাস পরীক্ষা হবে না, কোনো শিক্ষক ক্লাসে যাবেন না, ডিন কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করবেন না, কোনো সভা সেমিনার হবে না। সকল ধরণের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধ ঘোষণা করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাবি সাদা দলের আহবায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক এম ওহিদুজ্জামান, ফিল্ম এন্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক শফিউল আলম ভূঁইয়া, জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রহিম প্রমুখ।