‘বেনজীরের দুর্নীতি’ ও ‘এমপির হানি ট্র্যাপ’ নিয়ে ঢাবির পরীক্ষায় প্রশ্ন, যা বললেন কোর্স শিক্ষক 

ঢাবি
  © ফাইল ছবি

পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের দুর্নীতি এবং ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ড নিয়ে মিড টার্মের প্রশ্ন এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্স পরীক্ষায়। মাস্টার্সের ‘থিউরিস অব সোশ্যাল চেঞ্জ’ (এসওসি ৫০২) বিষয়ের এমন প্রশ্নপত্র এখন নেটিজেনদের নজরে। সোমবার (৩ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) প্রথম সেমিস্টারের ৫০২ নম্বর কোর্সের প্রথম ও দ্বিতীয় মিডটার্ম পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রশ্নপত্রে দেখা যায়, প্রথম প্রশ্নটি এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের হত্যাকাণ্ড নিয়ে করা। সেখানে এনডিটিভির খবরকে সূত্র হিসেবে ব্যবহার করে ‘হানি-ট্র্যাপে বাংলাদেশি এমপি: ৫ কোটি টাকার চুক্তিতে হত্যা’ শিরোনামে খবরের কিছু অংশ তুলে দিয়ে তা বিশ্লেষণ করতে বলা হয়। বাংলাদেশের সামাজিক পরিবর্তনে যে ধারা তা কার্ল মার্ক্স, ফ্রয়েড, মারকুস ও হার্ভের তত্ত্বের আলোকে বিশ্লেষণ করতে বলা হয়।

২ নম্বর প্রশ্নে সময় টিভির একটি সংবাদের বরাতে ‘বেনজীরের দুর্নীতি : সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি ও দুর্নীতি দমন কমিশন সক্রিয় হবে কি?’ শিরোনামে বাংলাদেশের পুঁজিবাদী প্রক্রিয়া নিয়ে মার্ক্স ও হার্ভের থিওরি অনুযায়ী বিশ্লেষণ করতে বলা হয়েছে। ব্যতিক্রমী এমন প্রশ্নে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোর্স শিক্ষকের প্রশংসা করেছেন অনেকেই। কেউ কেউ এটাকে সাহসের ব্যাপার বলে উল্লেখ করেছেন।

রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহিবুর রহমান শোয়েব নামের এক শিক্ষক প্রশ্নপত্রের ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে লিখেছেন, এ রকম একটা প্রশ্ন করার সাহস দরকার। দুষ্ট রাজনীতি, নিজে বিপদে পড়ার ভয়, সমালোচিত হওয়ার ভয়, নিজের অপারগতা ইত্যাদি ইত্যাদি কারণে করাও যায় না।

ঢাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, এ ধরনের প্রশ্ন অনেক আগে থেকেই করে আসছেন কোর্সটির শিক্ষক অধ্যাপক এ আই মাহবুব উদ্দিন। পরীক্ষার প্রশ্নগুলো কোর্সের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। কার্ল মার্ক্সসহ বিভিন্ন মনীষীর উক্তির সাথে সামঞ্জস্য রেখে এ প্রশ্ন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অভিমত জানতে চাইলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন কোর্স শিক্ষক অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন। তিনি বাংলাদেশ মোমেন্টসকে বলেন, এরকম প্রশ্ন আমার নতুন না। গত বিশ বছর ধরেই আমি এগুলো করছি। আমি পি কে হালদারের বেলায়ও করেছি, পরিমনির বেলায়ও করেছি।  কারণ এটাই আমর বিষয়বস্তু এবং সমাজ জানতে হলে কি ঘটছে সেটা যেমন জানতে হয়, কেন ঘটছে সেটাও জানতে হয়। এটা কেন যে ভাইরাল হলো জানি না কিন্তু এরকম আমি আগেও করেছি।

তিনি বলেন, এরকম প্রশ্ন আরও হওয়া দরকার যাতে আমরা দাসত্ব না করি কারণ আমরা শিক্ষক।