বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিংয়ে ঢাবির বড় চমক 

ঢাবি
  © ফাইল ছবি

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থা কোয়াককোয়ারেলি সায়মন্ডসের (কিউএস) শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় চমক দেখিয়েছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। গত বারের সেরা এক হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঢাবির অবস্থান ছিলো ৬৯১ থেকে ৭০০ রেঞ্জের মধ্যে কিন্তু এবারই প্রথম তা ডিঙিয়ে ওপরে স্থান পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

কিউএস র‌্যাংকিংয়ে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের সেরা ১ হাজার ৫০৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে দেশের ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৫৫৪ তম যা দেশের স্থান পাওয়া সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এগিয়ে। এর আগে ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা পাঁচ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৮০১ থেকে ১০০০ রেঞ্জের মধ্যে ছিল।

দেশের দ্বিতীয় সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও (বুয়েট) উন্নতি করেছে। গত বছরের ৮০১-৮৫০ রেঞ্জ থেকে এবার ৭৬১-৭৭০ রেঞ্জে উন্নীত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

এ ছাড়া, দেশের তৃতীয় সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে উঠে এসেছে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি। গত বছরের ৯০১-৯৫০ রেঞ্জ থেকে নেমে এবার ৮৫১-৯০০ রেঞ্জে অবস্থান করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

এই তিন বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও র‌্যাংকিংয়ে স্থান পাওয়া দেশের বাকি ১২ বিশ্ববিদ্যালয় হলো—ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় (১০০১-১২০০); চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (১২০১-১৪০০)। এ ছাড়া, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি), স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এবং ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (১৪০১+)।

এদিকে কিউএস র‌্যাংকিংয়ে ভারতের ১৩টি ও পাকিস্তানের দুটি বিশ্ববিদ্যালয় শীর্ষ ৫০০ তালিকায় স্থান পেয়েছে। এবারের পূর্ণাঙ্গ তালিকায় বাংলাদেশের ১৫, ভারতের ৫০ ও পাকিস্তানের ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান করে নিয়েছে।

কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাংকিং-২০২৫-এ টানা ১৩ বছরের মতো শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্যের ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্থ এবং পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে।

এশিয়ার একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে অষ্টম স্থান দখল করে নিয়েছে সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর।

১১৮তম অবস্থান নিয়ে ভারতের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠেছে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বোম্বে (আইআইটিবি) এবং ৩১৫তম অবস্থান নিয়ে পাকিস্তানের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পেয়েছে কায়েদ-ই-আজম বিশ্ববিদ্যালয়।

২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশনের সঙ্গে যৌথভাবে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করলেও ২০১০ সালে আলাদা হয়ে যায় কিউএস। এরপর থেকে এককভাবেই র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করে আসছে তারা। কিউএসের প্রকাশিত সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাকে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য র‍্যাঙ্কিংগুলোর একটি মনে করা হয়। এই র‍্যাঙ্কিংয়ে এখন আটটি সূচকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক মান নিরূপণ করা হয়। প্রতিটি সূচকে ১০০ করে স্কোর থাকে। সব সূচকের যোগফলের গড়ের ভিত্তিতে সামগ্রিক স্কোর নির্ধারিত হয়।

কিউএস র‍্যাঙ্কিংয়ের সূচকগুলো হলো একাডেমিক খ্যাতি (একাডেমিক রেপুটেশন), চাকরির বাজারে সুনাম (অ্যামপ্লয়ার রেপুটেশন), শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত (ফ্যাকাল্টি-স্টুডেন্ট রেশিও), শিক্ষকপ্রতি গবেষণা-উদ্ধৃতি (সাইটেশনস পার ফ্যাকাল্টি), আন্তর্জাতিক শিক্ষক অনুপাত (ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাকাল্টি রেশিও), আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অনুপাত (ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট রেশিও), আন্তর্জাতিক গবেষণা নেটওয়ার্ক (ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ নেটওয়ার্ক) ও কর্মসংস্থান (অ্যাম্প্লয়মেন্ট আউটকামস)।