সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে

ক্লাস-পরীক্ষাসহ সকল দাপ্তরিক কাজ বন্ধ, সেশনজটের শঙ্কা শিক্ষার্থীদের

পাবিপ্রবি
  © টিবিএম

শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও কর্মকর্তাদের লাগাতার কর্মবিরতিতে স্থবিরতা নেমে এসেছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) সকল কার্যক্রমে। একাডেমিক ও দাপ্তরিক ব্যস্ততার জায়গাগুলোতে বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা। আজ থেকে চালু হওয়া পেনশন স্কিম প্রত্যয় প্রত্যাহারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তার অংশ হিসেবে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও কর্মবিরতি কর্মসূচী পালন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সামনে এক ঘণ্টা অবস্থান ধর্মঘট করেন শিক্ষকরা।

সেখানে আজ (সোমবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস পরীক্ষা বয়কটের ঘোষণা দেয় শিক্ষকরা। শিক্ষকরা বলছেন, এই পেনশন স্কিম বাস্তবায়ন হলে জুলাই থেকে যোগদান করা শিক্ষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফলে শিক্ষকতা পেশায় আসতে মেধাবীরা আগ্রহী হবে না। বৈষম্যমূলক ও মর্যাদাহানিকর প্রত্যয় স্কিম থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার, শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তন, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ৮ জুন থেকেই অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করছেন কর্মকর্তারা। কর্মকর্তা পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ২১ মে ৪ শতাংশ গৃহ ঋণ বাস্তবায়ন, কর্মকর্তাদের পদন্নোতি নীতিমালা সংশোধন, কর্মকর্তাদের নিয়োগবিধি সংশোধনসহ ১৫ দফা দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর একটি স্মারকলিপি দেয়া হয়। ২৮ মে পর্যন্ত দাবিগুলো বাস্তবায়নের সময় দেয়া হয়। কিন্তু দাবিগুলো বাস্তবায়ন না করায় ৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে ৮ জুন থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়ে একটি চিঠি দেয়া হয়। এর আগে ৫ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হাফিজা খাতুন কর্মকর্তা পরিষদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তবে উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকে দাবিগুলো বাস্তবায়নের কোনও সমাধান হয়নি বলে জানান কর্মকর্তা পরিষদের নেতারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান ক্লাস-পরীক্ষা ও দাপ্তরিক কাজের স্থবিরতা নিয়ে ক্ষোভ ও সেশনজটের আশংকা প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন বিভাগ ও বর্ষের শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি, এভাবে চলতে থাকলে দীর্ঘ সেশনজটে পড়বে তাদের শিক্ষাজীবন। এমনিতেই করোনার জটের কারণে এখনো পাশ করে বের হতে পারে নি কয়েকটি ব্যাচ। তাদের জন্য এটি বাড়তি হতাশার কারণ হবে বলে মনে করছেন তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শেষ বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, শিক্ষকদের দাবিটি ন্যয্য। তবে এর ফলে শিক্ষার্থীরা যে সেশনজটে পড়ছেন সেদিকেও তাদের দৃষ্টি দেওয়া উচিত। আন্দোলন পরবর্তী সময়ে সেমিস্টারগুলো যেনো দ্রুতসময়ে শেষ করা হয়, এটিই আহ্বান জানাচ্ছি। 

শিক্ষার্থীদের হতাশা ও ক্ষোভের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরের পরিচালক ড. নাজমুল হোসেন বলেন, শিক্ষকদের আন্দোলনটি একটি জাতীয় আন্দোলন। এখানে আমরা একটি অংশমাত্র৷ তবে শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের বিষয়টিও আমাদের মাথায় আছে। তারা যেনো এটির কারণে ক্ষতিগ্রস্থ না হয়, আন্দোলন পরবর্তী সময়ে আমরা সেদিকে খেয়াল রাখবো। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের হতাশ না হতে পরামর্শ দেন তিনি। 


মন্তব্য