শিক্ষকদের আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়েছে ডিইউ ওভারসিজ টিচার্স কমিউনিটি

ঢাবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

পেনশন প্রজ্ঞাপনে চালু করা ‘প্রত্যয়' স্কিম বাতিলের দাবিতে দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছে বিদেশে উচ্চশিক্ষায় পাড়ি জমানো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ঢাকা ইউনিভার্সিটি ওভারসিজ টিচার্স কমিনিউটি। বুধবার (৩ জুলাই) সংগঠনটির এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়। বিবৃতিতে সংগঠনটি শিক্ষকদের আন্দোলনে একাত্মতা জানানোর পাশাপাশি পূর্বের পেনশন ব্যবস্থা বাতিলের অযৌক্তিকতা তুলে ধরে। এই বিবৃতিতে সর্বজনীন পেনশন স্কিমকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সাংঘর্ষিক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রত্যয় স্কিমের ফলে শিক্ষা খাতে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হবে এমন মন্তব্যও করেছে সংগঠনটি।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে জ্ঞানভিত্তিক ও প্রগতিশীল সমাজ গঠনে অবদান রাখার প্রতিশ্রুতির অংশ হিসাবে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শতাধিক শিক্ষক এই মুহূর্তে বিশ্বের ১৬টি দেশের প্রায় ১৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জনে অবস্থান করছি। সাম্প্রতিক সময়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত শিক্ষকদের সম্মান ও মর্যাদাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে, যা আমাদের মাঝে গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করেছে।

বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থা বাতিলের অযৌক্তিকতা‌ তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের বিদ্যমান নানা সমস্যার দিকে আলোকপাত না করে বরং একটি চলমান এবং গ্রহণযোগ্য পেনশন ব্যবস্থাকে বাতিল করা “বিনা মেঘে বজ্রপাত”-এর সমতুল্য। এটি অনভিপ্রেতই নয়, বরং দুরভিসন্ধিমূলক বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান।

এই প্রত্যয় স্কিম প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে এতে বলা হয়, গত ১৭ আগস্ট ২০২৩ তারিখে ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে একটি কল্যাণরাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার যে প্রয়াস নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী 'সর্বজনীন পেনশন স্কিম' ঘোষণা করেন সেই উদ্বোধনী ভাষণে তিনি স্পষ্ট করেই বলেন যে, “যারা সরকারি চাকরিজীবী তারা পেনশন পান। কিন্তু যারা চাকরি করেন না, তারা তো পান না। কাজেই এটি সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নয়। যারা সরকারি বেতন পাবেন বা পেনশন পাবেন, তাদের জন্য এটি প্রযোজ্য হবে না। তার বাইরে যে জনগোষ্ঠী- শুধু তাদের জন্য এই ব্যবস্থাটা আমরা করে দিচ্ছি।” কিন্তু হঠাৎ করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কে বা কারা 'প্রত্যয়' নামক পেনশন স্কিমের অবতারণা করলেন তা খতিয়ে দেখা জরুরি। আমরা একে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মহতী উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র বলে মনে করছি।

এর ফলে শিক্ষা খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা আশংকা প্রকাশ করছি এই স্কিম বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করলে তা বাংলাদেশের পুরো শিক্ষাব্যবস্থার জন্য এক কালো অধ্যায়ের সূচনা করবে। কারণ, এর ফলে দেশের সবচেয়ে মেধাবীরা একদিকে শিক্ষকতা পেশার প্রতি আগ্রহ হারাবে, অপরদিকে অনেকেই এই পেশা ছেড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাবে। তাই 'প্রত্যয় দেশকে মেধাশূন্য করার নীল নকশার অংশ কিনা তা ভেবে দেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।