ফেনীতে বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক হওয়ায় কৃষকের মাঝে বাড়ছে কুল চাষে আগ্রহ

ফেনী
  © ফাইল ফটো

ফেনীতে বাহারি রকমের নানা স্বাদের কুল বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। জেলার বিভিন্ন জায়গার মাটি কুল চাষে উপযোগী হওয়া ও কুলের ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা হয় লাভবান। কাশ্মিরি, বলসুন্দরি, ভারত সুন্দরি, বাউকুলসহ নানা জাতের উচ্চফলনশীল কুল চাষে দিনদিন আগ্ৰহ বাড়ছে জেলার কৃষকদের মাঝে।

জেলার বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এ জেলায় চলতি মৌসুমে উৎপাদন হবে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের কুল। ফেনী পৌর এলাকার কৃষক আছমত উল্ল্যাহর ৫০ শতক, সদর উপজেলার আমিন বাজার এলাকার জান্নাত এগ্ৰো নামে একটি কৃষি প্রকল্পে ৫ একর, ফেনী সদরের ফাজিলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মজিবুল হক রিপন ৮০ শতক জমিতে, কালিদহে কে পাহারিয়া এগ্রোতে ৭০০ শতক, ধর্মপুরে ফরিদ উদ্দিন মাসুদ ৫০০শতক, সোনাগাজীতে মোঃ সোলেমানের ৫০০ শতক ও আমিন বাজারে পাশে আরও কয়েকজন মিলে ২ একর জমিতে কুলের আবাদ করেছেন। অল্পসময়ের অধিক লাভ পাওয়া এলাকায় বেকার যুবক ও কৃষকদের মাঝে কুল চাষে আগ্রহ বাড়ছে।

ফেনী পৌর শহরের ফলেশ্বরে ৫০ শতক জমিতে কুলের চাষ করেছেন কৃষক আছমত আলী। তার কুল বাগানে গিয়ে দেখা যায় কাশ্মীরী, বল সুন্দরী, বাউকুল, আপেল কুলসহ নানা জাতের কুল চাষ করছেন। তিনি জানান তার বাগানের কুল আকারে বড়, দেখতে সুন্দর ও সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে নেয়ার আগেই বাগান থেকে সব কুল বিক্রি হয়ে যায়। 

ফেনী সদর উপজেলার আমিন বাজা জান্নাত এগ্রো নামে একটি কৃষি প্রকল্পে ৫ একর জমিতে ৮ হাজার গাছের কুল বাগান করেছেন। বাগান মালিক তোফায়েল আহমেদ জানান, গত বছর তারা গাছগুলো লাগিয়ে ছিলেন এ বছর ফলন এসেছে। ইতোমধ্যে ১৩০ টাকা কেজী দরে ৫’শ কেজী কুল বিক্রি করেছেন তারা। চলতি মৌসুমে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকার কুল বিক্রি করার লক্ষ্যমাত্র রয়েছে তাদের।  

ফেনী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমীন আক্তার বলেন, এ সব কুল চাষিরা কৃষি বিভাগ থেকে কোনো প্রণোদনা না পেলেও প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। বাগান করার জন্য উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা তাদের নিয়মিত বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন।

উপ সহকারী কৃষি অফিসার (উন্নয়ন শাখা) মাহমুদুল করিম জানান, ফেনী সদরের বিভিন্ন এলাকায় কুল চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষকদের যে কোনো সমস্যায় তাদের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।  

কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর ফেনীর উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মিঠুন ভৌমিক বলেন, জেলায় প্রায় ৮৬ হেক্টর জমিতে কুলের আবাদ হয়েছে। যার উৎপাদন প্রায় লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৯৩৮ মেট্রিক টন। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরর ফেনীর উপ-পরিচালক মো. একরাম উদ্দিন বলেন, ফেনীতে কুলের বাণিজ্যিক আবাদ বাড়ছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার একটি বড় লক্ষ্য পুষ্টি নিশ্চিত করা। সে লক্ষ্যে এবং সরকার কৃষিকে বাণিজ্যিকীকরণ করার লক্ষ্যে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার উচ্চ মূল্যের ফল, বিভিন্ন শাক-সবজি এবং ফসল উৎপাদনে গুরুত্ব দিচ্ছে। এ লক্ষ্য সফল কুল চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে প্রান্তিক কৃষকদের।


মন্তব্য