কোরআন ছুঁয়ে জনপ্রতিনিধিদের বেইমানি না করার শপথ করালেন এমপি
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৫:২৫ PM , আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৭:৪৮ PM

নিজের পক্ষে রাখতে জনপ্রতিনিধিদের কোরআন শরীফে হাত রেখে শপথ করালেন রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। শনিবার রাতে জাতীয় সংসদ ভবনের নিজের কার্যালয়ে ওমর ফারুক চৌধুরী তাঁর নির্বাচনী এলাকার ১২ জন দলীয় নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের কোরআন শরীফ ছুঁয়ে আনুগত্যের শপথ করান।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী তার নিজের চেয়ারে বসে থেকে মোবাইলে ভিডিও করছেন। আর এক এক করে জনপ্রতিনিধিরা এসে এমপির সামনে টেবিলে রাখা কোরআন শরীফে হাত রেখে শপথ করছেন। কোরআন শরীফে হাত রেখে বলতে শোনা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগ, নৌকা ও স্থানীয় এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরোধিতা বা তাদের সঙ্গে বেইমানি করব না।
আনুগত্যের শপথ করার মধ্যে রয়েছেন, গোদাগাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, গোদাগাড়ী পৌরসভার মেয়র ওয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস, গোদাগাড়ীর মাটিকাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহেল রানা, গোদাগাড়ীর দেওপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল, গোদাগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ রানা, গোদাগাড়ীর মোহনপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান খায়রুল ইসলাম, গোদাগাড়ীর বাসেদেবপুর ইউনিয়নের নজরুল ইসলামসহ তানোর ও গোদাগাড়ীর বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়র। তাদের শপথ গ্রহণের পুরো ভিডিও করেন তানোর উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না।
এমপির প্রতি অনুগত থাকতে পবিত্র কোরআন শরীফে হাত রেখে শপথ করার বিষয়টি স্বীকার করে গোদাগাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, নৌকার পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে এমপি তাদের শপথ করিয়েছেন। কারণ, এখন এমপির পক্ষে থাকলেও ভোটের আগে অনেকেই সরে দাঁড়ায়। তাদের শপথ করাতে বাধ্য করা হয়নি বলেও দাবি করেন এই জনপ্রতিনিধি।
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী পৌরসভার মেয়র ও গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আয়েজ উদ্দিন বলেন, আমরা সংসদ সদস্যের প্রতি আনুগত্য থাকার শপথ নিয়েছি। এসময় অনেকেই ছিল সবাই কোরআন শরীফ ছুঁয়ে শপথ গ্রহণ করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ইউপি চেয়ারম্যান জানান, দুইদিন আগে গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলার পৌরসভার মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা চেয়ারম্যানদের ডেকে পাঠান এমপি। শনিবার সন্ধ্যায় সংসদ ভবনের নিজের চেম্বারে সবাইকে নিয়ে যান। সেখানে কোরআন শরীফে হাত রেখে এক এক করে সবাইকে শপথ করার। প্রথমে তার অনুগতরা শপথ করেন। ফলে বাধ্য হয়ে অন্যদের শপথ করতে হয়েছে।
এ বিষয়ে ওমর ফারুক চৌধুরী এমপি বলেন, আমি কাউকে শপথ করাইনি। তারা নিজেরাই কোরআন শরীফে হাত রেখে শপথ করেছেন। আমি কাউকে বলিনি বা চাপও দিইনি।
তিনি আরও বলেন, তারা সবাই আলোচনা করে এক সঙ্গে ঢাকায় এসেছেন। তারা আমার কাছে বলেছেন আমরা সবাই এক সঙ্গে থাকতে চাই। প্রয়োজনে কোরআন ছুঁয়ে শপথ করব। এরপর নিজের ইচ্ছায় মন থেকে তারা শপথ করেছেন। দুই-একজন যারা ভুল বলছিল তাদের আমি বলে দিয়েছি। এর বেশি কিছু না। এটি তারাও ভিডিও করেছেন, আমিও ভিডিও করেছি।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে যোগাযোগ করা হলে মন্তব্য করতে রাজি হননি জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার।
এদিকে, শপথ করানোর ভিডিও প্রকাশ হলে গোদাগাড়ী-তানোরসহ রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।