ফেনীর শেষ সিনেমা হল ভেঙে হচ্ছে বিপনীবিতান

সারাদেশ
সিনেমা হল ভেঙে হচ্ছে বিপনীবিতান  © টিবিএম ফটো

সত্তর বছরের পুরনো ফেনীর স্টেশন রোডের দুলাল সিনেমা হল ভেঙে হচ্ছে বহুতল বিপনীবিতান। এর ফলে ফেনী থেকে রূপালী পর্দার আলো নিভে যাবে চিরতরে। দীর্ঘদিন দর্শক সংকটের কারণে লোকসানের মুখে পড়ে মালিকপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা যায়।

ফেনী শহর, দাগনভূঞায়া ও ফুলগাজী মিলে একসময় সিনেমা হল ছিল ছয়টি। একে একে সব সিনেমা হল বন্ধ হলেও ‘দুলাল সিনেমা হল’ চালু রেখে সিনেমার শো চালিয়ে যাচ্ছিলো কতৃপক্ষ। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে দর্শকসংখ্যা কমে যাওয়ায় সিনেমা হলটি ভেঙে সেখানে বহুতল বিপণিবিতান নির্মাণের উদ্যোগ নেয় মালিকপক্ষ।

দুলাল সিনেমা হলের পরিচালক সফিউল বেলাল জানান, ‘বেদের মেয়ে জোসনা, রূপবানের মতো চলচ্চিত্র দেখতে দর্শকদের ভিড় সামাল দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিতে হয়েছে। ভালো ছবিগুলো দু-তিন মাস চালানোর পরও দর্শকদের চাহিদার কমতি ছিল না। তিনি আরো জানান, ২০১৫ সালের পর থেকে এ হলে দর্শক কমতে থাকে। হলটিতে ১০০ টাকায় আটটি ভিআইপি সিটি, ৮০ টাকা করে ২০ জনের কেবিন, ৭০ টাকা করে ৬০জনের বেলকনি ও ৬০ টাকা করে ৮০ জনের প্রথম শ্রেনীর আসন রয়েছে। গত কয়েক বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় তৃতীয় শ্রেণীর বিক্রি বন্ধ রয়েছে।

১৯৫২ সালে ফেনীর ক্রীড়া সংগঠক খায়রুল এছাক মিয়া শহরের রেলস্টেশন রোডে ছেলের নামে ‘দুলাল সিনেমা হল’ চালু করেন। এর পর একে একে চালু হয় সুরত মহল সিনেমা হল, কানন সিনেমা হল ও বিলাসী সিনেমা হল। এছাড়া ফুলগাজী উপজেলায় বিউটি সিনেমা হল ও দাগনভূঞায় ঝর্ণা সিনেমা হল নামে আরও দুটি সিনেমা হল ছিল। এসব হলে ছবি দেখতে জেলার বিভিন্ন উপজেলা এমনকি চট্রগ্রামের মিরসরাইয়, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম ও নাঙ্গলকোট থেকে হাজার হাজার দর্শক সিনেমা দেখতে ভিড় করতো এসব সিনেমা হলে।

দুলাল সিনেমা হলের আরেক পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, পরিবেশ, নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন আসনব্যবস্থার দর্শকদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে ছিল এ সিনেমা হলটি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে অব্যহ্নত লোকসানের কবলে পড়ে হলটি একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ হলটি বন্ধ করার মাধ্যমে ফেনী থেকে রূপালী পর্দার আলো একেবারে নিভে গেল।


মন্তব্য