দুমকিতে মুগডাল নিয়ে বিপাকে কৃষক,  নষ্ট হওয়ার আশংকা! 

দুমকি
  © টিবিএম ফটো

পটুয়াখালীর দুমকিতে মুগ ডালের বাম্পার ফলন হলেও ফসল তোলার মৌশুমে শ্রমিক সংকটে ক্ষেতের মুগডাল ক্ষেতেই নষ্ট হওয়ার আশংকা প্রকাশ করেছেন কৃষকরা। 

উপজেলার অধিকাংশ কৃষক এক সময় আমন ধানের পর বিনা চাষে খেসারি ডাল চাষ করতেন। আবার কেউ কেউ অধিকাংশ জমি পতিত রেখে দিতেন। কিন্তু অল্প সময়ে অধিক লাভ দেখে এখন আমন ধানের পাশাপাশি বোরো ধান, তরমুজ, তিল, সূর্যমুখী, ভুট্টা ও মুগ ডাল চাষ করছেন তারা। তবে খেত থেকে ডাল তোলায় শ্রমিক সংকটের কারণে ফসল তোলা ব্যাহত হচ্ছে বলে দাবী কৃষকের। কৃষক তার স্বপ্নের ফসল ঘরে তুলতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় দিনাতিপাত করছেন। 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে ৫টি ইউনিয়নে ৪হাজার ১'শ ৭১ হেক্টর জমিতে মুগডালের চাষাবাদ হয়েছে। যা গতবারের চেয়ে প্রায় ২ হাজার হেক্টর কম। কারন হিসেবে উপজেলা কৃষি বলছে মুগডাল তোলার চেয়ে তরমুজ ও তেল ফসল তোলা সহজ ও কম শ্রমসাধ্য। বিভিন্ন কারনে কৃষক বাধ্য হয়ে এসব ফসলের দিকে ঝুঁকছে এখানকার কৃষকেরা। 

সোমবার(০১মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডাল সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষান কৃষানিরা। অধিকাংশ ক্ষেতের মুগডাল পেকে গেলেও মাত্র ৩০% জমির ফসল তুলতে পেরেছেন তারা। 

সময়মত বৃষ্টি না হ‌ওয়ায় পোকায় আক্রমণ করেছিল উল্লেখ করে উত্তর রাজাখালি গ্রামের কৃষক মোঃ দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, জমির রস শুকিয়ে যাওয়ায় অনেক ডাল অঙ্কুরিত হতে পারে নি। তারপরে যে গুলো উঠেছে এবং ফুল ধরেছে তা পোঁকায় ধরেছিল। তবে কীটনাশক ও ঔষধ দেয়াতে এখন ফলন ভালো হয়েছে। 

হতাশা আর সংশয় প্রকাশ করে জলিশা গ্রামের সৈয়দ আতিকুল ইসলাম বলেন, ডাল তুলুনীর(শ্রমিক) অভাবে ক্ষেতে রয়ে গেছে প্রায় সব ডাল। সামনে বর্ষা বাদল শুরু হবে। আদৌ ডালগুলো ঘরে তুলতে পারবো কিনা জানি না। 

দক্ষিন মুরাদিয়া গ্রামের রেহেনা পারভীন নামের এক ডাল তুলুনী বলেন, প্রচুর রোদ আর পিপাসায় ক্লান্ত হয়ে পড়ি। আমরা একসাথে ৫/৬ জন করে একজন একজন কৃষকের ডাল তিনে ভাগে তুলে দেই। এতে আমাদের এ মৌসুমে বাড়তি কিছু আয় হয়। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, সরকারের কৃষি প্রনোদনায় বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ কর্মসূচির আওতায় কৃষকদের মুগ ডাল চাষে উৎসাহিত করা হয়েছে।  

হারভেস্টার মেশিনের বরাদ্দ দেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমানে বরাদ্দ নেই। তবে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে এ অসুবিধার কথা জানানো হবে। 

ডাল তুলতে শ্রমিক সংকটর কথা উল্লেখ করে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় পিএইচডি অধ্যায়নরত ডাল গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নন্দ দুলাল কুন্ডু বাংলাদেশ মোমেন্টসকে জানান, এ নিয়ে আমাদের গবেষণা চলমান রয়েছে। যাতে ৮০-৯০% ডালের একসাথে ম্যাচিউরিটি এসে যায় এবং কৃষক একসাথে ফসলটা ঘরে তুলতে পারে। আশা করি অতি শীঘ্রই আমরা সফল হবো।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ