ড্রাগন ফল চাষে সফল মাধবপুরে কৃষক আব্দুর রউফ খলিফা

সারাদেশ
ড্রাগন ফল  © টিবিএম ফটো

কয়েক বছর আগেও ড্রাগনকে বাংলাদেশের মানুষ জানতো বিদেশি ফল হিসেবে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে পাল্টে গেছে সেই ধারণা। হবিগঞ্জ জেলার জেলার মাধবপুর উপজেলার বাণিজ্যিকভাবে লাল ড্রাগন চাষ করে সফলতা পেয়েছেন কৃষক মো. আব্দুর রউফ খলিফা।

ড্রাগনফলের উদ্ভিদতাত্বিক নাম Hylocereus undatus । সেন্ট্রাল আমেরিকার প্রসিদ্ধ ফলটি দক্ষিণ এশিয়া বিশেষ করে মালয়েশিয়াতে এ ফলের প্রবর্তন করা হয় বিংশ শতাব্দীর শেষে। বর্তমানে বানিজ্যিকভাবে ভিয়েতনামে এ ফলের সর্বাধিক চাষ করা হয়।

তবে ইউটিউবে দেখে এই ড্রাগন ফল চাষে উদ্ভুদ্ধ হন হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের কৃষক মো: আব্দুর রউফ খলিফা। তিনি ৫৬ শতাংশ জমিতে করেন বিদেশি এই ফলের বাগান। স্থানীয় ভাবে সম্পুর্ন অপরিচিত এই ফলের বাগান করতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। এ সময় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।

মো. আব্দুর রউফ খলিফা জানান, ইউটিউবে ড্রাগন ফল চাষের ভিডিও দেখে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে প্রথমে জমির মাটি পরিক্ষা করি। তারপর জমি প্রস্তুুতি করে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে নাটোর থেকে ১ লাখ ৫৪ হাজার টাকা দিয়ে ২২শ চারা এনে রোপণ করি। সেই বছরই জুন থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এক লাখ টাকার ফল বিক্রি করি। পরের বছর দুই লাখ টাকার ফল বিক্রি করেছি। চলতি বছরে  ছত্রাকের আক্রমণে প্রচুর ফল নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে ঔষধ দেওয়ার পর ঠিক হয়েছে।এবছর এখন পর্যন্ত প্রায় এক লাখ টাকার ফল বিক্রি করেছি। গাছে আরও ফুল ও ফল আছে,ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বিক্রি করতে পারবো। আস্তে আস্তে ফলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তিনি জানান, ৫৬ শতাংশ জমিতে বাগান করতে তার সতেরো লাখ টাকা খরচ হয়েছে। খরচের টাকা উঠতে ৫/৬ বছর লাগতে পারে। ১৮ থেকে ২০ বছর এই গাছে ফল আসবে বলে আশা করছেন তিনি। এখন তিনি নিজেই চারা উৎপাদন করতে পারেন। তাই ভবিষ্যতে বাগানে নতুন চারা রোপণের জন্য বাড়তি কোন খরচ হবে না। নতুন করে কেউ বাগান করতে চাইলে কম খরচে চারা উৎপাদন করে দিতে পারবেন বলে জানান তিনি।

উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহন লাল নন্দী জানান, প্রথম থেকেই তিনি আমাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। সঠিক সার ব্যবস্থাপনা, পানি দেওয়ার সঠিক পদ্ধতি সহ সব ধরনের পরামর্শ দিয়েছি। এছাড়া কিছুদিন আগে ছত্রাকের আক্রমণে ফল কালো হয়ে ফেটে নষ্ট হয়ে যাচ্ছিলো, আমাদের পরামর্শে ঔষধ ব্যবহার করায় এখন আর সেই সমস্যা নেই।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন হাসান জানান, এখন শিক্ষিত যুবকরা ড্রাগন ফল সহ বিভিন্ন চাষাবাদে এগিয়ে আসছে। মাধবপুরে ইতিমধ্যেই ৫/৬ টা ড্রাগন ফলের বাগান হয়েছে।আরও অনেক শিক্ষিত যুবক আসছেন পরামর্শের জন্য। আমরা চেষ্টা করেছি আমাদের মাধ্যমে ড্রাগন ফল বিদেশে রফতানি করার জন্য।