৪৬ হাজার+ ভোট পেয়ে টানা চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত হলেন সুলতানা রাজিয়া

তেঁতুলিয়া
  © সংগৃহীত

তেঁতুলিয়া উপজেলায় টানা চতুর্থবারের মতো মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন সুলতানা রাজিয়া। উপজেলা নির্বাচনে তিনি কলস প্রতীকে পেয়েছেন ৪৬ হাজার ৭৯৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সোমা চৌধুরী। তিনি ফুটবল প্রতীকে পেয়েছেন ১৭ হাজার ৯৩৮ ভোট। 


গতকাল বুধবার (৮ মে) রাত ১১টার দিকে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো.শামীম হোসেন। 


জানা যায়, সুলতানা রাজিয়া একজন সাহসী নারী। তিনি উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তবে নির্বাচনে অংশ নিতে দল থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন তিনি। এলাকায় তিনি ‘পুষ্টি আপা’ নামে পরিচিত। ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিভাগের একটি প্রকল্পের উপজেলার এক ইউনিয়নের সুপারভাইজারের দায়িত্ব পালনকালে তিনি ‘পুষ্টি আপা’ নামে পরিচিত হন।


সুলতানা রাজিয়ার বাবার বাড়ি বোদা উপজেলার মাড়েয়া প্রধানপাড়া গ্রামে। ঐ গ্রামের মীর মোহাম্মদ সবারউদ্দিন প্রধানের মেয়ে তিনি। ১৯৯৪ সালে এসএসসি পাশের পরের বছরেই তেঁতুলিয়া উপজেলার কালান্দিগছ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাদাকাত আলী সরকারের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। দুই ছেলে-মেয়ের জননী তিনি। বাবা ইউপি সদস্য থাকাকালীন জনপ্রতিনিধি হওয়ার স্বপ্ন বোনেন সুলতানা রাজিয়া। ২০০৯ সালে পুষ্টি প্রকল্প থেকে পদত্যাগ করে তৃতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হন। এরপর চতুর্থ ও পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি।

সুলতানা রাজিয়া জেলা নারী উন্নয়ন ফোরামের নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সমাজের নানা অসঙ্গতি আর অনিয়মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষের বিপদে আপদে ছুটে যান। নারীদের বিপদে পাশে থেকে অর্জন করেন ব্যাপক জনপ্রিয়তা। নিজেই মোটরসাইকেল চালিয়ে নির্যাতিত নিপীড়িতদের পাশে দাঁড়ান। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছুটে চলেন উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে। বন্যায়, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থ জনগণকে সহায়তা করেন। নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোসহ বিচারিক কাজে ছুটে যান বিভিন্ন গ্রামে। সবার কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠার কারণে টানা চারবারের মতো মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন তিনি।


নির্বাচনে বিজয়ের পর সুলতানা রাজিয়া বলেন, এ বিজয়ে আমি সত্যিই ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। উপজেলার মানুষ আমাকে এতো ভালোবাসে যে বারবার নির্বাচিত করেছে। জনগণের এ ঋণ শোধ করার মতো নয়। তবে সর্বাত্মক চেষ্টা করবো এ উপজেলার মানুষ ও নারীদের যেকোনো বিপদ-আপদ ও সামাজিক উন্নয়নে কাজ করার। সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই।


মন্তব্য