পর্যটকহীন বান্দরবান, দীর্ঘশ্বাস পর্যটন সংশ্লিষ্টদের

বান্দরবানে
  © সংগৃহীত

বান্দরবানে ঘুরতে গেছেন, আর বগালেকের সিয়াম দিদিকে চেনেন না এমন মানুষ খুব কম। সেই জনপ্রিয় সিয়াম দিদির চোখে পানি। মনের ভিতর যেন কষ্টের বাধ ভেঙে যাচ্ছে সিয়ামসহ এখানকার সব পরিবারের। কারণ, পর্যটনে নির্ভর এসব এলাকার মানুষের আয়ের পথ প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ।

কুকি চিনের ধারাবাহিক তাণ্ডব আর যৌথ বাহিনীর অভিযান এবং নিরাপত্তার কারণে ২০২২ সাল থেকে বান্দরবানের অধিকাংশ এলাকা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। পাহাড়ে দ্রুত শান্তি ফেরার আশায় ফেলছেন দীর্ঘশ্বাস। তাদের প্রত্যাশা, খুব দ্রুতই যেন থানচি, রুমা, আলীকদম এবং রোয়াংছড়ির রুটগুলো খুলে যায়।

বগালেকের পর একই রুটে আরেকটি আকর্ষণীয় পরিচ্ছন্ন এবং সুন্দর গ্রাম হিসেবে পরিচিত দার্জিলিংপাড়ায় সরেজমিন দেখা যায়, এ যেন এক মরুভূমি। অভিযান, আতঙ্ক এবং আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গ্রাম ছেড়ে চলে গেছেন অনেকে। রুমা এলাকার কেওক্রাডং পাহাড় কেন্দ্রিক উদ্যোক্তা পরিবার লালা বমের পরিবারও ভাল নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বান্দরবানের পাহাড়ে কুকি-চিনের উৎপাত শুরু হবার পরই বন্ধ করে দেয়া হয় পযর্টকদের যাওয়া-আসা। এতে সবচেয়ে সংকটাপন্ন এলাকা রুমা ও থানচি।

যে রুমা বাজার রোজ শতশত পর্যটকে ঠাসা থাকতো সেখানেও কান পাতলে শোনা যায় শুধুই দীর্ঘশ্বাস। পর্যটন খাতের গাইড, চান্দের গাড়ি এবং বাইক চালকদের সংসার যেনো চলছেই না। থানচি জনপদের অবস্থাও একইরকম। বলিপাড়া হয়ে থানচি, রেমাক্রি, নাফাখুম, আমিয়াখুমের আশপাশে গ্রামের মানুষের আয়ের পথও বন্ধ বহুমাস ধরে।

অবস্থা শুধু ভেতরে খারাপ নয়, শহরেও নেই পর্যটকের আনাগোনা। গত দুই বছরে একদমই ব্যবসা করতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। ২০২০ সাল থেকে প্রথম করোনার ধাক্কা। এরপর কয়েক মাসের জন্য পরিস্থিতি ভাল হয়। পরে ২০২২ সাল থেকেই শুরু হয় কুকি-চিনের উৎপাত। অনেক ব্যবসায়ীই হোটেল ও গাড়ি বিক্রি করে দেয়ার পরিকল্পনা করছেন।

বান্দরবান হোটেল মালিক সমিতির নেতা জসীম উদ্দিন বলেন, বিগত ৪ বছর ধরে এ এলাকার সবার অবস্থাই খুব খারাপ। ব্যাংকের ঋণও মানুষ শোধ করতে পারতেছে না। এমনকি, অনেকে তাদের আয়ের মাধ্যম বিক্রি করতে চাচ্ছে। কুকি চিনকে নিয়ন্ত্রণে এনে দ্রুত পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনার দাবি বান্দরবানের সর্বস্তরের মানুষের।


মন্তব্য