যশোরে ডেভিল হান্ট অভিযানে তিনদিনে আটক ৪৬

যশোর
  © সংগৃহীত

যশোরে “ডেভিল হান্ট” অভিযানে গত তিন দিনে ৪৬ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিস্ফোরক, নাশকতা এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এই ৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ।

অভিযানের প্রথম দিন (১০ ফেব্রুয়ারি) যশোরের কোতোয়ালি, অভয়নগর, ঝিকরগাছা ও চৌগাছা উপজেলা থেকে ১৬ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।

আটককৃতরা হলেন, সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের বলরামপুরের মৃত হাজী খোরশেদ আলম বিশ্বাসের ছেলে ফেরদৌস আলম, উপশহর ডি-ব্লকের মনিরুজ্জামানের ছেলে মিজানুর রহমান রাফি, শেখহাটি তরফ নওয়াপাড়ার মৃত বজলুর রহমানের ছেলে আব্দুল হামিদ খোকন, ফতেপুরের ভায়না গ্রামের মৃত শুকুমার ঘোষের ছেলে মদন কুমার ঘোষ, একই গ্রামের মৃত বদর উদ্দীনের ছেলে শেখ হারুন অর রশীদ, রামকৃষ্ণপুরের মৃত হোসেন আলী মোল্লার ছেলে সোহরাব হোসেন শিহাব, লেবুতলার এনায়েতপুরের মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে শাহিনুর রহমান, একই গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে তুষার , লেবুতলার মৃত আকমলের ছেলে জাহাদায় ও মণিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের মসলেম গাজীর ছেলে ওলিয়ার রহমান।

এছাড়া চৌগাছার, কোমরপুর গ্রামের বাহাদুর মল্লিকের ছেলে ফজলুর রহমান ও পাশাপোল পশ্চিমপাড়ার ফারুক হোসেনের ছেলে আমিরুল ইসলাম।

অভয়নগরের, লক্ষীপুর গ্রামের গফফার বিশ্বাসের ছেলে মফিজুর রহমান ও গুয়াখালী গ্রামের ইমারতের ছেলে রবিউল ইসলাম, ঝিকরগাছার পুরন্দপুর গ্রামের ফকির হোসেনের ছেলে রায়হান হোসেন ও কদর আলীর ছেলে আয়নাল হোসেন।

তাদেরকে পৃথক মামলায় আদালতে সোপর্দ করা হয়।  আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পুলিশ জানান আটককৃতদের মধ্যে ২০১৮ সালের নির্বাচনী সহিংসতা মামলার আসামিরাও রয়েছেন।

অভিযানের দ্বিতীয় দিন (১১ ফেব্রুয়ারি) ১৬ জনকে আটক করা হয়, তাদের মধ্যে ৬ জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী রয়েছেন। এদের বিরুদ্ধে নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলায় আটক দেখানো হয়েছে ।

দ্বিতীয় দিনে আটককৃতরা হলেন, শার্শার ডিহি ইউনিয়নের সাইদুর রহমান, যশোর সদর উপজেলার ইছালী মথুরাপুর গ্রামের আব্দুস সবুরের ছেলে সাইফুল ইসলাম, বাঘারপাড়া উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের ইসমাইল শেখের ছেলে শরিফুল ইসলাম, ঝিকরগাছার বালিয়া গ্রামের শাহাজান গাজীর ছেলে শরিফুল ইসলাম, আব্দুল করিমের ছেলে আদম শফউল্লাহ ও বারাকপুর গ্রামের সায়েদ আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম। তাদেরমধ্যে কোতোয়ালি থানার একজন, ঝিকরগাছার তিনজন, বাঘারপাড়ার একজন ও শার্শার একজন। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাদেরকে আদালতে সেমাপর্দ করা হলে বিচারক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

তৃতীয় দিন (১২ ফেব্রুয়ারি) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে। যশোর সদর, মণিরামপুর, অভয়নগর, ঝিকরগাছা ও শার্শা উপজেলা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।

এদিনে আটককৃতরা হলেন, যশোর সদরের চুড়িপট্টি এলাকার সাধন রায়ের ছেলে পুলক রায়, মণিরামপুর উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের রহিম বক্সের ছেলে শহিদুল ইসলাম, নেহালপুর গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে আলমগির হোসেন, মোনহরপুর গ্রামের মশিউর রহমানের ছেলে আবদুল্লা আল-মামুন, অভয়নগর উপজেলার বনগ্রামের মৃত গনেষ চন্দ্র ভদ্রে ছেলে দীপংকর ভদ্র, ঝিকরগাছা উপজেলার বাকড়া মোড়লপাড়া গ্রামের জিয়াউল হকের ছেলে মোস্তফা হাদিউজ্জামান নয়ন, শ্রীরামপুর গ্রামের মহির উদ্দিন মন্ডলের ছেলে রিপন হোসেন, শার্শা উপজেলার মাটিপুকুর গ্রামের পাঞ্জাব আলী বিশ্বাসের ছেলে খোরশেদ আলম, মৃত আবুল আলীমের ছেলে রেজাউল ইসলাম, কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত আঃ রহিমের ছেলে ওয়াসিম, মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে মশিয়ার রহমান, বেনাপোল পুটখালী গ্রামের মশিউর আলীর ছেলে রিপন আলী ও মানকিয়া গ্রামের মৃত আঃ গনির ছেলে লিটন মল্লিক।

যশোর জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) নূর-ই-আলম সিদ্দিকি জানান, 'ডেভিল হান্ট’ অভিযানে শুধুমাত্র নাশকতা কিংবা বিস্ফোরক মামলার আসামিরা নয়, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী ও দেশ বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদেরও আটক করা হচ্ছে। তিন দিনের অভিযানে মোট ৪৬ জনকে আটক করা হয়েছে, এবং এ অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।