কুড়িগ্রামেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

কুড়িগ্রামেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
  © সংগৃহীত

সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনার পর এবার কুড়িগ্রামেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এতে জেলার ৬টি উপজেলায় বন্যার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন লাখো মানুষ। বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্নাঞ্চল ও নদ-নদীর অববাহিকায় বসবাসকারী চরাঞ্চলের মানুষ। 

শনিবার (১৮ জুন) পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, জেলার ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমা ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ২৩ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের পুর্বাভাস থাকায় নদ-নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসময় তিনি নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ১শ মিটার বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কথা জানান। 

জানা গেছে, জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে ৬ উপজেলার ২০টি ইউনিয়নে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।অনেক পরিবার নৌকা ও বাঁশের মাচানে আশ্রয় নিয়ে দিন পার করছে। বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে থাকায় দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পনির সংকট। নিজেদের পাশাপাশি গবাদি পশুর খাদ্যের সংকট দেখা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এসব চরাঞ্চলের অনেকেই তাদের গবাদি পশু নিয়ে উঁচু জায়গায় আশ্রয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

সদর উপজেলার চান মিয়া নামে এক ব্যক্তি বলেন, ঘরের ভেতরে বুক পর্যন্ত পানি উঠেছে। পার্শ্ববর্তী উঁচু জায়গা না থাকায় নৌকায় অবস্থান করছি। চুলা জ্বালাতে পারছি না। খুব কষ্টে পরিবার-পরিজন নিয়ে দিন পার করছি। উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মশালের চরের হাসান আলী জানান, কোনো রকমে ঘরের মাচান উঁচু করে বউ-বাচ্চা নিয়ে আছি। যেভাবে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে আর ঘরে থাকারও উপায় থাকবে না। 

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম জানান, বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্পিড বোট, নৌকা এবং আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলাগুলোতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দসহ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।