বিপৎসীমার উপরে ধরলা ও তিস্তার পানি

বন্যা
পানি বৃদ্ধি  © সংগৃৃহীত

পাহাড়ি ঢলে ধরলার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। একদিনেই পানি বেড়েছে ৭০ সেন্টিমিটার। নীলফামারীতে তিস্তা নদীর পানিও বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ২ সেন্টিমিটার ওপরে। এই দুই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। 

বুধবার (২৯জুন) সকাল ৬টা থেকে লালমনিরহাটের শিমুলবাড়ী পয়েন্টে ধরলার পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে  বানভাসিরা প্রথম দফার বন্যার ধকল কাটিয়ে ওঠার আগেই দ্বিতীয় দফায় বন্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়,  উজানের ঢলে গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা নদীর পানি বেড়েছে ৭০ সেন্টিমিটার বেড়ে গিয়ে ধরলার পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে প্লাবিত হচ্ছে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট, কুলাঘাট ও বড়বাড়ী ইউনিয়নে ১০ গ্রাম। 

আরও পড়ুন: সিলেটে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস

আজ দুপুর ১২টায় তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৬২ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ২ সেন্টিমিটার ওপরে। এই দুই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। 

এছাড়াও বন্যার পানি ঢুকছে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোয়। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ। এসব এলাকার পাট, ভুট্টা, বীজতলা ও সবজি ডুবে গেছে। সড়কে পানি ওঠায় চলাচল করতে পারছে না মানুষ। ভেলা ও নৌকায় চলাচল করতে হচ্ছে। ফলে প্রথম দফার বন্যার ধকল কাটিয়ে ওঠার আগেই বানভাসিদের দ্বিতীয় দফায় বন্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘ এখনো উজান থেকে পাহাড়ি ঢল আসা অব্যাহত আছে। সেই সঙ্গে বৃষ্টিও হওয়ায় নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। তবে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দিকে নজর আছে বলে জানান তিনি।বাঁধ ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি দেখা দিলে নেওয়া হবে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা।

আরও পড়ুন: বন্যায় পানিবন্দি পৌনে ৬ লাখ শিক্ষার্থী

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ‘দেশে এখনও মৌসুমি বায়ুর প্রভাব রয়েছে। ফলে বৃষ্টিপাত হবে। উজানে ভারী বৃষ্টিপাত হলে নদনদীর পানি বাড়বে, এটা স্বাভাবিক।

পাউবো জানায়, ভারতের হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টিপাতের কারণে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা তিস্তা অববাহিকা বন্যার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

এদিকে নীলফামারীতে আবারও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে উঠে গেছে। আজ দুপুর ১২টায় তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৬২ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ২ সেন্টিমিটার ওপরে।

এর আগে সকাল ৯টায় নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলার সংযোগস্থলে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি ছুঁইছুঁই করেছিল। তখন পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছিল ৫২ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার।

যদিও গত এক সপ্তাহ ধরে পানি কমতে থাকলেও আজ দুপুর থেকে বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। আর এভাবে পানি বাড়তে থাকলে বন্যার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। পানির চাপ মোকাবিলায় কর্তৃপক্ষ ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলেও রেখেছে।