পুলিশের পোশাক পরে ডাকাতি

সারাদেশ
পুলিশের পরিচয়ে ডাকাতি  © সংগৃৃহীত

গায়ে পুলিশের পোশাক, কোমরে পিস্তল ও পায়ে বুট। হাতে ওয়াকিটকি, হ্যান্ডকাপ। কাঁধে এসআইয়ের র‍্যাঙ্ক ব্যাজ। এভাবেই সজ্জিত হয়ে পুলিশের পরিচয়ে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কসহ বিভিন্ন জেলায় ডাকাতি ছিনতাই করত একটি চক্র। অবশেষে চক্রটির প্রধানসহ তিনজনকে আটক করেছে র‍্যাব-১০।

বুধবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-১০-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।

আটককৃতরা হলেন, দলনেতা জসিম মোল্যা, জাহিদ ও ইয়াসিন।

এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি স্বর্ণের চেইন, একটি রুপার ব্রেসলেট, দুটি ল্যাপটপ, পুলিশের এসআই র‍্যাঙ্ক ব্যাজসহ পুলিশের দুটি হাফ শার্ট, দুটি প্যান্ট, দুটি ক্যাপ, দুটি বেল্ট, একটি ওয়াকিটকি, দুই জোড়া কালো বুট, একটি রিফলেকটিং জ্যাকেট, দুটি রেইন কোর্ট, একটি খেলনা পিস্তল (কালো কাভারসহ), একটি চাপাতি, দুটি সুইচ গিয়ার চাকু, তিনটি লোহার ফোল্ডিং স্টিক, একটি ড্রিল মেশিন, দুটি স্ক্রু ড্রাইভার, একটি রেঞ্জ, দুটি হাতুড়ি, একটি কাটার মেশিন, একটি প্লাস কাটার, ছয়টি লোহার রডের টুকরা, একটি করাত, দুটি ছেনি কাটার, একটি দুরবিন, একটি ডিজিটাল ওয়েট মেশিন, তিনটি মাউস, পাঁচটি কাটারের বেল্ট, একটি বাংলাদেশ পুলিশ লিখিত লেমিনেটিং কাগজ, একটি মহিলাদের ছদ্মবেশ ধারণের আলগা চুল, পাঁচটি মোবাইল ফোন ও নগদ ৫৩ হাজার ৫০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

ফরিদ উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে পুলিশের ছদ্মবেশে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ডাকাতি ছিনতাইয়ের সময় দলনেতা জসিম এসআই র‍্যাঙ্কের পোশাক পড়তো। আর সহযোগীরাও থাকতো পুলিশের পোশাকে। এভাবে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে সুযোগ বুঝে ডাকাতি ছিনতাই করতো। পাশাপাশি বড় বড় ব্যবসায়ীদের ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা চাঁদা নিতো চক্রটি। দলনেতা জসিমের বিরুদ্ধে খুন, ডাকাতি, ছিনতাইসহ নানা অভিযোগে ১৩টি মামলা রয়েছে। আর তার সহযোগী জাহিদুলের বিরুদ্ধে রয়েছে চারটি মামলা রয়েছে।

র‍্যাব জানায়, দলনেতা জসিম ২০১৬ সালেও পুলিশের পোশাক পড়ে ডিএমপির হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিল। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স হওয়ার পর রায়হান নামে ধারণ করে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। তার বাড়িতে গিয়েও দেখা যায় সব কিছু দামি জিনিসপত্র। তাকে দেখে মনে হয়, তিনি বিত্তশালী। কি ধরনের সম্পদ রয়েছে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তিনি বিচ্ছিন্ন বিচ্ছিন্ন গ্রুপ তৈরি করে বিভিন্ন জায়গায় এসব অপরাধ কর্মকাণ্ড করেছেন।

গ্রেপ্তার ডাকাতদের দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং ওই চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান র‍্যাব-১০-এর অধিনায়ক।