মেয়ের মায়াবী চেহারা দেখে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন আয়াতের বাবা
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২২, ০১:১৯ PM , আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২২, ০১:১৯ PM

একদিন আগেও মেয়ের মায়াবী চেহারাটি শেষবারের মতো দেখার আকুতি জানিয়েছিলেন চট্টগ্রামে হত্যার পর ছয় টুকরা করা শিশু আলিনা ইসলামের হতভাগ্য বাবা সোহেল রানা। কিন্তু প্রাণপ্রিয় সন্তানের এমন বীভৎস চেহারা দেখবেন তা ভাবেননি।
গতকাল বৃহস্পতিবার স্লুইসগেট এলাকা থেকে আয়াতের বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার করে পিবিআই। এ সময় তার মাথার চুল ও ক্লিপ দেখে তার দেহাংশ শনাক্ত করেন স্বজনরা। পলিথিনের আবরণ সরাতেই তাই 'ও আম্মুরে...' বলে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন আয়তের বাবা। সন্তানের খণ্ডিত মাথাটি বুকে টেনে নিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া নিথর ছোট্ট মুখটি নিষ্পলক চেয়েছিল আকাশের দিকে।
এর আগে বুধবার ইপিজেড থানাধীন আকমল আলী রোডের স্লুইসগেটের পাশ থেকে আয়াতের খণ্ডিত পা দুটি উদ্ধার করে পিবিআই। পুলিশ কর্মকর্তাদের ভাষ্য, জিজ্ঞাসাবাদে আবীর আয়াতকে ছয় টুকরো করে খালে ও সাগরে ভাসিয়ে দেওয়ার তথ্য দিয়েছিল। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী গত বুধবার দুই পা উদ্ধার হয়। এবার মাথাটি পাওয়া গেল। আয়াতের লম্বা চুলে লাগানো ক্লিপটিও ছিল অক্ষত।
পিবিআই জানায়, এবার আয়তের শরীরের ঊর্ধ্বাংশ, দুই হাত, পরনের হিজাব ও জামার সন্ধানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উদ্ধার অভিযানে থাকা পিবিআই মেট্রোর উপপরিদর্শক জাহেদুজ্জামান চৌধুরী জানান, টানা ছয় দিন ধরে খালে ও সাগরপাড়ে শিশুটির মরদেহের খোঁজে কাজ করছি আমরা। সকালেও খালে নামার জন্য এসেছি। এ সময় এক জেলে চিৎকার করে পোঁটলা পাওয়ার কথা জানান। গিয়ে দেখি পোঁটলাটিতে আয়াতের খণ্ডিত মস্তক।
উল্লেখ্য গত ১৪ নভেম্বর নগরীর ইপিজেড থানার দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের নয়ারহাট এলাকার বাসিন্দা সোহেল রানার মেয়ে আলীনা ইসলাম আয়াতকে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে অপহরণ করে আবীর। কিন্তু কোথাও আটকে রাখার জায়গা না থাকায় অপহরণের পরপরই শিশুটিকে হত্যা করে। পরে লাশ ছয় টুকরো করে সাগরে ভাসিয়ে দেয়।
ঘটনার ১০ দিন পর ২৪ নভেম্বর রাতে আবীরকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। পরদিন তাকে নিয়ে দিনভর সাগরপাড়ে অভিযান চালিয়ে খণ্ডিত দেহাবশেষ উদ্ধারের চেষ্টা করে পিবিআইয়ের তদন্ত দল। কিন্তু স্রোতের টানে ভেসে যাওয়ায় টুকরোগুলো পাওয়া যায়নি।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা বলেন, মুক্তিপণের উদ্দেশ্যে ঘটনার দিন বিকেলে আয়াতকে অপহরণের চেষ্টা করে আবীর। এসময় চিৎকার করলে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে সে। পরে মরদেহ আকমল আলী সড়কের বাসায় নিয়ে ছয় টুকরা করে। পরে খণ্ডিত মরদেহ দুটি ব্যাগে নিয়ে বেড়িবাঁধ এলাকায় নদীতে ফেলে দেয় আবির।
এদিকে শিশু আলীনা ইসলাম আয়াত হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আসামি আবীর এবং তার মা-বাবা বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রিমান্ড রয়েছে।