আবাসিক গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে তিতাস

অর্থনীতি
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড  © ফাইল ফটো

দেশে চলছে গ্যাস সংকট। এর মধ্যে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব আবেদন করেছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। এক চুলার  ১৩৭৯ টাকা  এবং দুই চুলার (ডাবল বার্নার) ১৫৯১  টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।

তিতাস সূত্রে জানা গেছে, গত ২ মে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠিয়েছে তিতাস। প্রস্তাবে আবাসিকে মিটারবিহীন এক এবং দুই চুলার গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ৩৯ থেকে ৪৭ শতাংশ গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয় । গ্রাহকরা নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে অতিরিক্ত গ্যাস ব্যবহার করেন এমন দাবি করে মূল্যবৃদ্ধির আবেদন করা হয়ছে।  এক  চুলার ক্ষেত্রে একজন গ্রাহক প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ৫৫ ঘনমিটার এবং দ্বিমুখী চুলার ক্ষেত্রে ৬০ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করেন এমন বিবেচনায় কমিশন সর্বশেষ গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ করেছে। প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ১৮ টাকা হিসাবে বর্তমানে মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকের মাসিক বিল যথাক্রমে ৯৯০ ও ১০৮০ টাকা দিতে হয়। বর্তমানে মিটারবিহীন গ্রাহকের সংখ্যা ২৫ লাখ ২৫ হাজার। তিতাসের নতুন দাম কার্যকর হলে প্রতি মাসে তাদের বাড়তি আয় হবে ১২৮ কোটি টাকা।

পড়ুন>>> বিদ্যুৎ-গ্যাস সরবরাহ কবে স্বাভাবিক হবে জানালেন প্রতিমন্ত্রী

আবেদনে আরও বলা হয়, গ্রাহকরা রান্নার পাশাপাশি গ্যাস ব্যবহার করে পানি ফুটায়। অনেক বাসায় সাবলেট ভাড়াটিয়া থাকে। এতে কমিশন নির্ধারিত গ্যাসের চেয়ে বেশি পরিমাণে গ্যাস ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে তারা এক যুগ আগের একটি সমীক্ষার উদ্ধৃতি দিয়েছে। তাদের দাবি, ২০০০-২০০১ অর্থবছরে রাজধানীর গুলশান, বনানী এলাকায় প্রায় ১০০ আবাসিক গ্রাহকের বাসায় স্থাপিত মিটারের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গ্যাসের মাসিক ব্যবহারের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৮৭ দশমিক শূন্য ৫ ঘনমিটার এবং ১১২ দশমিক ৪২ ঘনমিটার।

এ বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তিতাসের এ দাবি একেবারেই  অযৌক্তিক। গ্রাহকরা প্রতি মাসে ৪৫ থেকে ৫০ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করেন, যা কমিশন নির্ধারিত পরিমাণের চেয়েও কম। গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সর্বশেষ গণশুনানিতে এটি প্রমাণিতও হয়েছে। তাছাড়া, বর্তমানে প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারী ৪ সদস্যের একটি পরিবারে দুই চুলা এক হাজার টাকার গ্যাস দিয়ে গড়ে প্রায় দুই মাস চলে। অন্যদিকে মিটারবিহীন গ্রাহক গ্যাস  ব্যবহার করুক  বা নাই করুক, এমনকি কোনো মাসে এক দিনও চুলা না জ্বালালেও তাকে দুই চুলার জন্য প্রতি মাসে ১০৮০ টাকা গুণতে হচ্ছে। অনেক গ্রাহকের বাসায় আবার বেশির ভাগ সময়ই গ্যাস থাকে না। থাকলেও চাপ থাকে কম। মাসিক বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে গ্যাসের স্বল্পতার এ বিষয়গুলো কখনোই আমলে নেওয়া হয় না।


মন্তব্য