নতুন করে নিত্যপন্যের দাম বাড়ায় বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

ঈশ্বরদী
  © টিবিএম ফটো

ঈশ্বরদী বাজারে ফের বেড়েছে আলু, পেঁয়াজ-রসুন, আদাসহ  নিত্যপ্রয়োজনীয় কাচামালের দাম। এতে বিপাকে পড়েছে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ। পন্যের দাম বাড়লেও বাড়েনি আয়। আয়ের সঙ্গে খরচের ভারসাম্য রাখতে গিয়ে নিম্ন-মধ্যবিত্তদের কাটছাঁট করতে হচ্ছে প্রতিদিনের বাজার তালিকা। এভাবে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ মানুষ। তাদের মতে, গত চারদিনের ব্যবধানে কেজি প্রতি ৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের   দাম। পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ২০ টাকা বেড়েছে। আলুর দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৭ টাকা। আর আদার দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ টাকা।

আড়তদাররা বলছেন, ঢাকার সিন্ডিকেটের কারসাজিতে আমদানি বন্ধ রেখে এসব পন্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। উৎপাদন কমের কারণে সরবরাহে ঘাটতির কথা বলা হলেও আমদানি চালু হলে দাম কমে যাবে বলে স্থানীয় পাইকাররা জানিয়েছেন।

বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পন্যের দাম বাড়ায় সাধারণ মানুষ চরম বেকায়দায় পড়েছে। 

শনিবার  (২০ মে) ঈশ্বরদী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগে থেকেই বেশি দামের অনেক পণ্যের দাম নতুন করে বেড়েছে। খোলা চিনির দাম কেজি প্রতি ১৬ টাকা বাড়িয়ে ১২০ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। প্যাকেটজাত চিনির কেজি ১২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে আগে থেকে অস্থির চিনির বাজার আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। ১৪৫-১৫০ টাকার কমে খোলা চিনি মিলছে না। প্যাকেটজাত চিনি সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই উধাও।

বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটার প্রতি ১২ টাকা বাড়িয়ে ১৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। যা ছিল ১৬৭টাকা। নতুন দামের তেল এখনও বাজারে আসেনি। কিন্তু পুরোনো দাম লেখা মোড়কের বোতলও বাজারে এখন বিক্রি হচ্ছে নতুন দামে। এছাড়া আটা, ময়দা ও ডালের দাম নতুন করে না বাড়লেও, সেগুলো বেশ আগেই বেড়ে অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। 

পেঁপে, কাঁচামরিচ, বেগুন পটলসহ অন্যান্য কাচামালের দামও কেজিতে ১০ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বাজারে আসা ক্রেতা আরিফ বিশ্বাস বলেন, বাজারে পণ্যের পর্যাপ্ত আমদানি ও মজুদ থাকলেও কারসাজি করে বিক্রেতারা দাম বাড়িয়েছেন। আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য রাখতে না পেরে আমরা হিমশিম খাচ্ছি।

ক্রেতা শেখ মহসিন জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয়  দ্রব্যমূল্য না কমালে মানুষের সব কিছু নাগালের বাইরে চলে যাবে। আমরা দাঁড়াবো কোথায়?সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করলে অনেকটাই সমাধান সম্ভব।

ক্ষোভ প্রকাশ করে ক্রেতা মাহফুজুর রহমান শিপন বলেন, বিক্রেতারা সুযোগ পেলে দাম বাড়াবেই। এটা নিত্য ব্যাপার। বলে কোনো লাভ নেই। বিক্রেতারা যে দামে বিক্রি করবে সেই দামেই আমাদের কিনতে হবে। যারা কথা বলার বা তদারকি করার, তারা কাজ করে না বলেই বাজারের এই অবস্থা।

কাঁচামালের আড়তদার মনিরুজ্জামান বলেন, ব্যবসায় দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ এখন পুঁজিপতিদের হাতে। ঈশ্বরদীর অনেক বড় বড় গোডাউন ফুল লোডে তারা মালামাল স্টক করে। সরকার আমদানি শুরু করলে এসব পণ্যের দাম কমে যাবে।

ব্যবসায়ী কামাল আশরাফী বলেন, নিয়মিত রাজার মনিটরিং করলে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

কাচামাল দোকান্দার মোঃ কুরমান আলী বলেন, স্টক করা বিভিন্ন গোডাউনে অভিযান চালালে সিন্ডিকেট ভেঙ্গে যাবে এবং কৃত্রিম সংকট না থাকলে বাজার স্বাভাবিক হতে পারে।

পাবনা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মাহমুদ হাসান রনি বলেন, বৈরি আবহাওয়ার কারনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের দাম একটু বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সরকার ঘোষিত নির্ধারিত মুল্যের চেয়ে বাজার সিন্ডিকেটের কারনে অতিরিক্ত দাম যেন বৃদ্ধি না পাই সে ব্যাপারে প্রত্যেকটি বাজারে আমাদের তদারকি  চলমান রয়েছে।


মন্তব্য