সর্বজনীন পেনশন স্কিম: ৫০ লাখ টাকা জমা দিয়ে ৬ কোটি টাকা পর্যন্ত ফেরত পাবেন

পেনশন
সর্বজনীন পেনশন স্কিম  © সংগৃৃহীত

প্রবাসী, বেসরকারি কর্মচারী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন শ্রেণির বয়স্ক নাগরিকদের জন্য একটি টেকসই সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকার সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করতে যাচ্ছে।

সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং বিদ্যমান সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের সুবিধাভোগীর সংখ্যা কমানোর পাশাপাশি, এ পেনশন স্কিমে চাঁদা প্রদানকারীরা উল্লেখযোগ্য সুবিধা পাবেন।

১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী বাংলাদেশি নাগরিকেরা চারটি স্কিমে যোগ দিতে পারবেন: প্রবাসীদের জন্য ‘প্রবাস’, বেসরকারি কর্মচারীদের জন্য ‘প্রগতি’, স্বকর্মে নিয়োজিত [অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত] ব্যক্তিদের জন্য ‘সুরক্ষা’ এবং অতিদরিদ্রদের জন্য ‘সমতা’। এসব স্কিম সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা উদ্বোধনের দিন থেকেই চালু হবে। ৫০ বছরের বেশি ব্যক্তিরাও এসব স্কিম নিতে পারবেন, তবে ন্যূনতম ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার পর তারা পেনশন পেতে শুরু করবেন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট নথি অনুযায়ী, ১৮ বছর বয়সে এ স্কিমে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে বেসরকারি খাতের কর্মচারী বা প্রবাসীরা তাদের ৪২ বছরের চাঁদার তুলনায় ১২ গুণ বেশি লাভবান হতে পারবেন।

যেমন, যদি একজন প্রবাসী প্রবাস স্কিমের অধীনে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে শুরু করেন, তাহলে ৬০ বছর বয়স পর তিনি সরকারি তহবিলে মোট ৫০ লাখ ৪০ হাজার টাকা চাঁদা দেবেন। এরপর ৬০ বছর থেকে ন্যূনতম ৭৫ বছর পর্যন্ত মাসিক ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫৫ টাকা করে পাবেন। ফলে তার মোট পাওয়া পেনশনের পরিমাণ দাঁড়াবে ছয় কোটি ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৯০০ টাকায় — যা তাদের দেওয়া মোট চাঁদার প্রায় ১২.৩১ গুণ।

অন্যদিকে, প্রগতি স্কিমের আওতায় বেসরকারি খাতের একজন কর্মচারী প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দিলে মোট ২৫ লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদা দেবেন। ৭৫ বছর বয়সে এসে তার মোট সরকারি পেনশনের পরিমাণ হবে মোট দেওয়া চাঁদার ১২.৩১ গুণ তথা তিন কোটি ১০ লাখ ১৮ হাজার ৮৬০ টাকা।

যদি পেনশনভোগী ৭৫ বছরের আগে মারা যান, তাহলে তার নমিনি সেই বয়স (৭৫) পর্যন্ত একই হারে পেনশন পাবেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি পেনশন ব্যবস্থা সরকারি রাজস্বের উৎস হিসেবে কাজ করবে, কারণ সরকার প্রাথমিক ১০ বছরের জন্য একটি প্রিমিয়াম পাবে। এ সময়ের মধ্যে কোনো পেনশন দেওয়া হবে না। সরকার এ অর্থ লাভজনক বিভিন্ন উদ্যোগে বিনিয়োগ করবে।

এছাড়া, প্রবাসীদের ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম বৈদেশিক মুদ্রায় নেওয়া হবে এবং পেনশন স্থানীয় মুদ্রায় দেওয়া হবে। এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়বে।

চারটি স্কিমের এ সর্বজনীন পেনশন স্কিম আগামী ১৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। একটি অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে এ পেনশন স্কিমে যুক্ত হওয়া যাবে।

আপাতত, সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ পেনশন স্কিমের আওতা-বহির্ভূত থাকবেন। এছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের অন্তর্ভুক্ত নাগরিকদের এ ব্যবস্থায় রাখা হবে না। তবে, সর্বজনীন নিরাপত্তা বলয়ের সুবিধাভোগী কেউ তার এসব সুবিধা সমর্পণ করে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।

১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী বাংলাদেশি নাগরিকেরা চারটি স্কিমে যোগ দিতে পারবেন: প্রবাসীদের জন্য 'প্রবাস', বেসরকারি কর্মচারীদের জন্য 'প্রগতি', স্বকর্মে নিয়োজিত [অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত] ব্যক্তিদের জন্য 'সুরক্ষা' এবং অতিদরিদ্রদের জন্য 'সমতা'। এসব স্কিম সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা উদ্বোধনের দিন থেকেই চালু হবে। ৫০ বছরের বেশি ব্যক্তিরাও এসব স্কিম নিতে পারবেন, তবে ন্যূনতম ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার পর তারা পেনশন পেতে শুরু করবেন।

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর চাঁদার হার এবং পছন্দকৃত স্কিম পরিবর্তন করার সুযোগ থাকবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী সকল নাগরিক তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় যোগ দিতে পারবেন। তবে, যেসব প্রবাসী বাংলাদেশির এনআইডি নেই, তারা বৈধ পাসপোর্টের ভিত্তিতে ব্যাংকিং চ্যানেল, অনুমোদিত মোবাইল আর্থিক পরিষেবা এবং এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রায় চাঁদা দিয়ে যোগদান করতে পারবেন।-বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড