বোরোর ভালো ফলনেও শঙ্কায় কৃষক
রংপুর অঞ্চলে চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ছাড়িয়েছে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রাও। ৫টি জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ১৭ লাখ মেট্রিক টন চাল অতিরিক্ত থাকবে বলছে কৃষি বিভাগ। তবে ফলন ভালো হলেও তীব্র গরমে সেচের বাড়তি খরচে ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত কৃষকরা।
বাংলা নতুন বছরের শুরু থেকে অসহনীয় দাবদাহে পুড়েছে দেশ। তীব্র গরমে কৃষি, প্রাণ ও প্রকৃতি ছিল বিমর্ষ। এখন কিছুটা সহনীয় প্রকৃতিতে মিলছে বৃষ্টি। বাতাসে দোল খাচ্ছে বোরো ধানখেত। প্রকৃতি অনুকূলে থাকায় ফুরফুরে মেজাজে কৃষকরা শুরু করেছেন ধান কাটা ও মাড়াই।
রংপুর নগরীর বোতলা এলাকার ধানচাষি মোকলেস বলেন, এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে সারের দাম বেড়েছে। সেইসঙ্গে জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য ডিজেলসহ অন্যান্য খরচও বেড়েছে। বর্তমানে ধান রোপণ করা থেকে কাটা পর্যন্ত শ্রমিকদের মজুরি বেশি। ধান চাষ করতে এবার অনেক বেশি খরচ হয়েছে। এসবের মাঝেও ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছি।
কৃষক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট পলাশ কান্তি নাগ বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা বলয় ঠিক রাখতে কৃষকরা যাতে লোকসানে না পড়েন সে বিষয়ে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। কৃষকদের অধিকার নিয়ে আন্দোলন করা সংগঠকদের ধারণা, উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা না গেলে ধান চাষে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে কৃষকরা। এতে সামগ্রিক প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. ওবায়দুর রহমান মণ্ডল বলেন, এ বছর প্রকৃতি এখনো অনুকূলে রয়েছে। প্রতিনিয়ত কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে কৃষকেরাও প্রতিনিয়ত দক্ষতা অর্জন করেছেন। এসব নানা কারণে চলতি মৌসুমে অন্য জেলার চাইতে রংপুরে বোরো ধানের ফলন অসম্ভব ভালো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চলতি মৌসুমে বিআর-২৮, বিআর-২৯, বিআর-৮১, বিআর-৮৮, বিআর-৮৯ জাতের ধান ছাড়াও হাইব্রিড জাতের ধান আবাদ হয়েছে। জেলায় চালের চাহিদা আছে প্রায় ১৭ লাখ মেট্রিক টন। এবার রংপুর অঞ্চলের বোরো ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ৭ হাজার ৮৩৫ হেক্টর থাকলেও তা ছাড়িয়েছে।