গাজায় অর্থসাহায্যে ২০ কি.মি সাইকেলে চালিয়ে পাহাড়ে উঠলেন ৮২ বছর বয়সি নারী!

গাজা
  © সংগৃহীত

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় বর্বর ও নৃশংস হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের ভয়াবহ হামলায় গাজা এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। ৭ মাসের অধিক সময় ধরে চলমান ইসরায়েলি হামলায় ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছে ১০ লাখের অধিক ফিলিস্তিনি। এই দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ গাজায় ত্রাণ সহায়তা পাঠাচ্ছেন। এবার যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার জন্য অর্থসাহায্য তুলতে ফ্রান্সের অন্যতম বিখ্যাত মন্ট ভেনটক্স পাহাড়ে সাইকেল চালিয়ে উঠেছেন ৮২ বছর বয়সি এক নারী। ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত ১,১৯০ মিটার দীর্ঘ এই পাহাড়টিতে উঠতে তাকে ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। 

সাউথ লন্ডনের অধিবাসী এন্নি জোনস মূলত এমোস ট্রাস্টের হয়ে গাজাবাসীর সাহায্যে এগিয়ে আসেন। প্রায় ১,৯১০ মিটার উচ্চতার পাহাড়টিতে পৌঁছাতে তার সময় লেগেছে ছয় ঘণ্টা।

এক্ষেত্রে সাইকেল চালানোর সময় জোনস শিলাবৃষ্টি ও কুয়াশার মতো প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছিলেন। পরিশেষে তিনি এই ভ্রমণ শেষে ১৩ হাজার পাউন্ড সংগ্রহ করেন। 

ছয় নাতি-নাতনি থাকা জোনস এখনও বেশ উদ্যমী। তিনি এই কৃতিত্ব অর্জন করতে পেরে বেশ 'আনন্দিত'। একইসাথে তিনি আশা করেন যে, তার এই কাজের পর লোকজন এতদিন যে তার 'বৃদ্ধ চেহারা' অনুমান করতেন সেটিতে পরিবর্তন আসবে।

জোনস পেশায় একজন অবসরপ্রাপ্ত সাইকোথেরাপিস্ট ও সমাজকর্মী। তিনি নিজের এই অর্জন সম্পর্কে বলেন, "আমি লোকেদের সেখানে যেতে উৎসাহিত করতে চাই। অনেকে ৬৫ বছরের মতো বয়স হলে মনে করে যে, এই বয়সে তারা কিছুই করতে পারবেন না। কিন্তু আমি বোঝাতে চাই যে, তারা চাইলেই অনেক কিছু করতে পারে।"

জোনস গত গ্রীষ্মে এমোস ট্রাস্টের পরিচালক ক্রিস রোজের সাথে একটি সাইকেল ভ্রমণের সময় পাহাড়টিতে ওঠার পরিকল্পনা করেন। তিনি মনে করেন যে, ফিলিস্তিনের জনগণের পাশে দাঁড়ানো তার 'দায়িত্ব'।   

জাস্টগিভিং পেইজে জোনস বলেন, "হতাশা ও যন্ত্রণার মধ্যে নিজেকে বন্দি রাখার চেয়ে বরং আমি আমার সময়কে এভাবে কাটাতে পারি। প্রায় ১১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি শিশুকে হত্যা করা হয়েছে।"

জোনসের সাইকেল যাত্রায় সঙ্গে ছিল পুরো একটি দল। ঐ দলের সদস্যদের মধ্যে এমোসের রোজ ও মেগান উইলিয়ামস অন্যতম। এক্ষেত্রে মেগান রোজকে সকলের জন্য 'অনুপ্রেরণা' বলেছেন। 

অন্যদিকে জোনস জানান, তিনি নিজ পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং গাজার লোকজনের কাছ থেকেও প্রচুর সমর্থন পেয়েছেন। 

তিনি বলেন, "অনেক বেশি সাহায্য উঠেছে। এটা সত্যিই বেশ আনন্দের ব্যাপার। এটি অনেকটা অনুপ্রেরণারও। কারণ লোকেরা হতাশ হোক এমনটা অবশ্যই আপনি চান না।"
সূত্র: বিবিসি


মন্তব্য