বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের জন্মশতবার্ষিকী আজ
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৩, ১১:০৯ AM , আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২৩, ১১:০৯ AM

পুরো নাম-শেখ মোহাম্মদ সুলতান। নড়াইলবাসীর কাছে ‘লাল মিয়া’ হিসেবে সমধিক পরিচিত তিনি। যার রঙ তুলিতে দারিদ্র-ক্লিষ্ট ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো পেশিবহুল। শ্রমজীবী মানুষগুলো হয়েছেন শক্তিশালী ও দৃঢ় মনোবলের অধিকারী তিনি বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতান। খ্যাতিমান এই চিত্রশিল্পীর ১০০তম জন্মদিন আজ।
১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইলের মাছিমদিয়ায় বাবা মেছের আলী ও মা মাজু বিবির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন এসএম সুলতান। তার চিত্রকর্মের স্বকীতায় ‘লাল মিয়া’ থেকে হয়ে ওঠেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। তিনি মাটি ও মানুষের শিল্পী হিসেবেও পরিচিতি।
এদিকে, সুলতানের জন্মবর্ষ নিয়ে এবার বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ১৯২৩ সালের ১০ আগস্ট সুলতানের জন্মদিন উল্লেখ করে মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর পক্ষ থেকে ‘জন্মশতবর্ষ’ উপলক্ষে চিঠিপত্র করা হয়েছে।
তবে সুলতান ফাউন্ডেশনসহ স্থানীয়দের মতে, ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট এস এম সুলতান জন্মগ্রহণ করেন। প্রতিবছর এ হিসেবে জন্মবার্ষিকী পালন হয়ে থাকে। সেই হিসেবে এবার সুলতানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী। এ বিভ্রান্তি ছাপিয়ে এবার বড় পরিসরে জন্মশতবর্ষ পালন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জেলা প্রশাসন, সুলতান ফাউন্ডেশন ও সুলতান স্মৃতি সংগ্রহশালার উদ্যোগে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
শিশুদের অঙ্কিত চিত্রকর্ম নিয়ে ১০০ বর্গফুট দৈর্ঘ্যের ছবি প্রদর্শন করা হবে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, বরেণ্য চিত্রশিল্পী হাশেম খানসহ খ্যাতিমান চিত্রশিল্পীরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন।
এস এম সুলতান চিত্রশিল্পের মূল্যায়ন হিসেবে ১৯৮২ সালে পেয়েছেন একুশে পদক, ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদক, ১৯৮৪ সালে রেসিডেন্ট আর্টিস্ট স্বীকৃতি, ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননাসহ ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’, নিউইয়র্কের বায়োগ্রাফিক্যাল সেন্টার থেকে ‘ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট’ এবং এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে ‘ম্যান অব এশিয়া’ পুরস্কারসহ বিভিন্ন সম্মাননা পেয়েছেন।
বরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের আজীবনের লালিত স্বপ্ন ছিল শিশুদের নিয়ে। নিজের সঞ্চিত অর্থে শহরের মাছিমদিয়া এলাকায় চিত্রা নদীর পাড়ে নিজ বাড়িতে শিশুস্বর্গ নির্মাণ করে নৌকায় করে কোমলমতি শিশুদের সঙ্গে নিয়ে প্রকৃতি দেখবেন। শিশুরা প্রকৃতির সঙ্গে পরিচিত হবেন। প্রকৃতির ছবি আঁকবেন। কিন্তু তার সেই সাধ পূর্ণ হওয়ার আগেই ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোরের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শিল্পী সুলতান মৃত্যুবরণ করেন।
অসুস্থ অবস্থায় ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। প্রিয় জন্মভূমি নড়াইলের কুড়িগ্রাম এলাকায় সংগ্রহশালা চত্বরে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন এসএম সুলতান।