একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি মোহাম্মদ রফিক আর নেই

সাহিত্য
কবি অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিক  © সংগৃৃহীত

একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিক আর নেই। রোববার (৬ আগস্ট) বরিশাল থেকে ঢাকা ফেরার পথে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তার মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন কবির ভাই মোহাম্মদ তারেক।

তারেক জানান, তিনি বরিশালে বোনের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। রোববার রাতে সেখান থেকে ঢাকা আসার পথে রাজৈর উপজেলায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। গাড়িতে থাকা অবস্থায় তার বমি শুরু হয়। এরপর তাকে থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ১০টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরও বলেন, তার মরদেহ বাগেরহাটে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হবে।

উল্লেখ্য, মোহাম্মদ রফিকের জন্ম ১৯৪৩ সালের ২৩ অক্টোবর বাগেরহাট জেলার বেমরতা ইউনিয়নের চিতলী-বৈটপুর গ্রামে। তিনি একাধারে একজন কবি, লেখক ও শিক্ষক। মোহাম্মদ রফিক আট ভাইবোনের মধ্যে সবার বড়। তিনি দুই ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

২০১০ সালের একুশে পদকপ্রাপ্ত এ কবি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন।

মননশীল আধুনিক কবি হিসেবে পরিচিতি পাওয়া মোহাম্মদ রফিক খুলনা জেলা স্কুল থেকে ১৯৫৮ সালে মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৬১ সালে ঢাকার নটরডেম কলেজে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। পরে রাজশাহী সরকারি কলেজে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন এবং স্নাতক শেষ করেন।

১৯৬০-এর দশকে পাকিস্তান আমলে ছাত্র আন্দোলন এবং স্বাধীন বাংলাদেশে আশির দশকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে কাব্যিক রসদ যুগিয়ে তিনি পরিচিতি পান।

১৯৭০ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘বৈশাখী পূর্ণিমা’ এবং ১৯৭৬ সালে প্রকাশ পায় তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘ধুলার সংসারে এই মাটি’।

কবির উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হলো- কীর্তিনাশা (১৯৭৯), খোলা কবিতা ও কপিলা (১৯৮৩), গাওদিয়ায় (১৯৮৬), স্বদেশী নিঃশ্বাস তুমিময় (১৯৮৮), মেঘে এবং কাদায় (১৯৯১), রূপকথা কিংবদন্তি (১৯৯৮), মৎস্য গন্ধ্যা (১৯৯৯), মাতি কিসকু (২০০০), বিষখালি সন্ধ্যা (২০০৩), নির্বাচিত কবিতা (২০০৩), কালাপানি (২০০৬), নির্বাচিত কবিতা (২০০৭), নোনাঝাউ (২০০৮), দোমাটির মুখ (২০০৯), ত্রয়ী (২০০৯), মোহাম্মদ রফিক রচনাবলী-১ (২০০৯), মোহাম্মদ রফিক রচনাবলী-২ (২০১০)। তার গদ্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ভালবাসার জীবনানন্দ (২০০৩), আত্মরক্ষার প্রতিবেদন (২০০১), স্মৃতি বিস্মৃতির অন্তরাল (২০০২)।

মোহাম্মদ রফিক একুশে পদক ছাড়াও বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান মোহাম্মদ রফিক। এ ছাড়া আলাওল পুরস্কারসহ (১৯৮১) বিভিন্ন পুরস্কার, পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ