বাংলাদেশের দীর্ঘ নদীপথ পাড়ি দিবে ভারতের প্রমোদতরী: উদ্বোধন করলেন নরেন্দ্র মোদী 

গঙ্গা বিলাস
  © সংগৃহীত

ভারতের উত্তরপ্রদেশ থেকে বাংলাদেশ হয়ে আসাম পর্যন্ত নদীপথে বিলাসবহুল প্রমোদতরী উদ্বোধন করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি এটির উদ্বোধন করেন।

বিলাসবহুল এই প্রমোদতরীর নাম 'গঙ্গা বিলাস'। এতে থাকবে নদী-বিহারের ব্যবস্থা। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুক্রবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে বিশ্বের দীর্ঘতম নদী ক্রুজ এমভি গঙ্গা বিলাসের উদ্বোধন করেছেন। এই প্রমোদতরীর প্রথম যাত্রায় ৩২ জন সুইস পর্যটক অংশ নিয়েছেন এবং তারা বাংলাদেশ হয়ে আসামের ডিব্রুগড়ে পৌঁছাবেন।

এনডিটিভি বলছে, এমভি গঙ্গা বিলাস ভারতে তৈরি প্রথম ক্রুজ জাহাজ। এটি নদীপথে ৫১ দিনে মোট ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটার ভ্রমণ করবে। প্রথম যাত্রার অংশ হিসেবে সুইজারল্যান্ডের ৩২ জন পর্যটককে বারাণসী বন্দরে মালা এবং শেহনাইয়ের সুর দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। ক্রুজে যাত্রা করার আগে তারা বারাণসীর বিভিন্ন ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করবেন।

ক্রুজের পরিচালক রাজ সিং বার্তাসংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, চলন্ত এই পাঁচ তারকা হোটেলে ৩৬ জন পর্যটকের ধারণক্ষমতাসহ ১৮টি স্যুট রয়েছে। এ ছাড়া এতে ৪০ জন ক্রু সদস্যের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। আধুনিক এই প্রমোদতরীটির দৈর্ঘ্য ৬২ মিটার এবং প্রস্থ ১২ মিটার।

ভারত ও বাংলাদেশের ২৭টি নদী দিয়ে যাবে বিলাসবহুল নৌযান গঙ্গা বিলাস। পথে পড়বে বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান। পড়বে সুন্দরবন ও কাজিরাঙার মতো বনভূমি। এ সবই দেখতে দেখতে চলবেন নৌযানের যাত্রীরা। এটাই হতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ নদী-বিহার।

উত্তরপ্রদেশের পর্যটন মন্ত্রী জয়বীর সিংয়ের এক বিবৃতি অনুসারে, গঙ্গা বিলাস নামের ক্রুজটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান, জাতীয় উদ্যান, নদীর ঘাট এবং বিহারের পাটনা, ঝাড়খণ্ডের শাহীগঞ্জ, পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, বাংলাদেশের ঢাকা, আসামের গুয়াহাটির মতো বড় শহরগুলোসহ ৫০টি পর্যটন গন্তব্য কভার করবে।

গঙ্গা বিলাসের যাত্রা শুরু হবে উত্তরপ্রদেশের বারাণসী থেকে। সেখানে গঙ্গা আরতি দেখার পর চলতে শুরু করবে প্রমোদতরী। গাজিপুর, রামনগর, বক্সার হয়ে অষ্টম দিনে পৌঁছবে পাটনায়। ফারাক্কা ও মুর্শিদাবাদ হয়ে সুন্দরবন ঘুরে ২০তম দিনে পৌঁছবে কলকাতা। তার পরের দিনই তা বাংলাদেশের দিকে যাত্রা শুরু করবে।

বাংলাদেশে এক হাজার একশ কিলোমিটার নদীপথ পাড়ি দেবে এই প্রমোদতরী। সোনারগাঁও যাবে, ষাট গম্বুজ মসজিদ দেখানো হবে। ঢাকা ও টাঙ্গাইল ছাড়াও প্রমোদতরী যাবে বাগেরহাট, হাড়বাড়িয়া, কটকা, মোড়লগঞ্জ, বরিশাল, মেঘনাঘাট,  সিরাজগঞ্জ, বাহাদুরাবাদ, চিলমারি ও রংপুরে। এরপর ধুবরি, গুয়াহাটি, তেজপুর হয়ে আসামের ডিব্রুগড়। সেখানেই যাত্রা শেষ।

রাজ সিং বলেন, ক্রুজটিতে ভ্রমণের জন্য প্রতিদিন ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার রুপি খরচ হবে, আর ৫১ দিনের যাত্রার জন্য প্রতি যাত্রীর জন্য মোট খরচ হবে প্রায় ২০ লাখ রুপি।

ভারতের কেন্দ্রীয় বন্দর শিপিং এবং জলপথ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল বার্তাসংস্থা এএনআইকে বলেছেন, ‘এই প্রমোদতরীতে ভ্রমণ বিদেশি পর্যটকদের সমুদ্রযাত্রার অভিজ্ঞতা এবং ভারত ও বাংলাদেশের শিল্প, সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং আধ্যাত্মিকতায় যুক্ত হওয়ার সুযোগ দেবে।’