'দ্য স্যাটানিক ভার্সেস' এর লেখক সালমান রুশদির পরবর্তী উপন্যাস প্রকাশ

রুশদি
সালমান রুশদি   © টিবিএম ফটো

ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক সালমান রুশদি গত বছরের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে সাহিত্যবিষয়ক একটি অনুষ্ঠানের মঞ্চে ছুরিকাঘাতের শিকার হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় মৃত্যুর খুব কাছ থেকে ফিরে আসা রুশদি এখনো পুরোপুরি সেরে ওঠেননি। এরই মধ্যে আগামীকাল মঙ্গলবার তাঁর লেখা নতুন উপন্যাস ‘ভিক্টরি সিটি’ প্রকাশ পেতে যাচ্ছে।

এটি মূলত সংস্কৃত ভাষায় লেখা একটি ঐতিহাসিক মহাকাব্যের অনুপ্রেরণায় রচিত। এখানে পম্পা কাম্পানা নামের এক অনাথ মেয়ের গল্প তুলে ধরেছেন ঔপন্যাসিক। এক দেবীর কাছ থেকে জাদুকরি শক্তি পাওয়া পম্পা আধুনিক ভারতে বিসনাগা নামের একটি শহর খুঁজে পান। উপন্যাসে শহরটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ভিক্টরি সিটি’। পুরুষতান্ত্রিক বিশ্বকে উপেক্ষা করে এই নারী কীভাবে একটি শহরকে পরিচালনা করেছেন, সে গল্পই উঠে এসেছে বইটিতে।

শারীরিক অবস্থার কারণে ৭৫ বছর বয়সী রুশদি তাঁর এই ১৫তম উপন্যাসের প্রচারকাজে অংশ নেবেন না। তবে তাঁর প্রতিনিধি অ্যান্ড্রু উইলি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে বলেছেন, এই লেখকের শারীরিক অবস্থা ক্রমাগত উন্নতির দিকে। গত অক্টোবরে উইলি জানিয়েছিলেন, হামলার পর রুশদি তাঁর একটি চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। তিনি তাঁর একটি হাতের কর্মক্ষমতাও হারিয়েছেন।

তবে সশরীর বইয়ের প্রচারে অংশ না নিলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারের মাধ্যমে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন রুশদি। নতুন উপন্যাসটি নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে যেসব রিভিউ লেখা হচ্ছে, সেগুলো তিনি প্রায়ই টুইটারে শেয়ার করছেন।

বইটি প্রকাশ উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানও আয়োজন করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে আগামীকাল মঙ্গলবার ও যুক্তরাজ্যে আগামী বৃহস্পতিবার ‘ভিক্টরি সিটি’ প্রকাশ পাবে। রুশদি ২০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।

আহমেদ সালমান রুশদি একজন ব্রিটিশ ভারতীয় ঔপন্যাসিক ও প্রাবন্ধিক। তিনি ১৯শে জুন, ১৯৪৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার দ্বিতীয় উপন্যাস মিডনাইটস চিলড্রেন ১৯৮১ সালে 'ম্যান বুকার' পুরস্কার অর্জন করেছিল। তার লেখার অনেকটা অংশ জুড়েই থাকে ভারতীয় উপমহাদেশ। বলা হয়ে থাকে যে তিনি জাদু বাস্তবতার সাথে ঐতিহাসিক কল্পকাহিনী একত্রিত করে লিখেন। পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে অসংখ্য সংযোগ, বিচ্ছিন্নতা ও অভিপ্রয়াণ তার লেখার অন্যতম বিষয়বস্তু।

১৯৮৮ সালে প্রকাশিত তার চতুর্থ উপন্যাস 'দ্য স্যাটানিক ভার্সেস' বিশ্বব্যাপী একটি বড় আকারের বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল। বইটি প্রকাশের পর বেশ কয়েকটি দেশের মুসলিমরা প্রতিবাদ জানায় যা অনেক সময় সহিংস রূপ ধারণ করে। তাকে মৃত্যুর হুমকি দেয়া হয়। ইরানের প্রধান ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি এই বই রচনার জন্য ১৯৮৯ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া জারি করেছিল। সেই সঙ্গে তাঁর মাথার দাম হিসেবে ৩ মিলিয়ন (৩০ লাখ) ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেন।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ