তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে আড়াই কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত: ডব্লিউএইচও
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৭:২৩ PM , আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৭:২৩ PM
দক্ষিণ তুরস্ক এবং উত্তর সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। সেখানে আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রচেষ্টা জোরদার করা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউএইচও অনুমান করছে, তুরস্ক এবং সিরিয়া জুড়ে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ এই ভূমিকম্পের শিকার হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউএইচও বলছে, তাদের হিসাব অনুযায়ী, দুই দেশ মিলিয়ে ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ভূমিকম্পের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১০ লাখেরও বেশি শিশু রয়েছে বলে ডব্লিউএইচওর জ্যেষ্ঠ জরুরি কর্মকর্তা অ্যাডেলহেইড মার্শাং জাতিসংঘ স্বাস্থ্য সংস্থার নির্বাহী কমিটিকে জানিয়েছেন।
এদিকে তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতায় জানিয়েছেন, তুরস্কের মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে তিন হাজার ৫৪৯-এ পৌঁছেছে। এছাড়া আরো ২০ হাজার ৫৩৪ জন আহত হয়েছে এবং প্রায় ছয় হাজার ভবন ধসে পড়েছে। অন্যদিকে সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬০২।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট আরও জানিয়েছেন, ১০টি শহরকে দুর্যোগ কবলিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং বিশ্বের ৭০টি দেশ তাদের সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে।
তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এএফএডি হালনাগাদ পরিসংখ্যানে জানিয়েছে, ২৪ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি জরুরি কর্মী অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করছেন। তবে এই শীত মৌসুমে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে গেলে উদ্ধার অভিযান বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে।
বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সংবাদদাতা অ্যানা ফস্টার তুরস্কের ওসমানিয়া শহর থেকে ধ্বংসস্তূপের বর্ণনা দিয়েছেন। এই শহরটি ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছেই। তিনি বলেছেন, ‘বৃষ্টির কারণে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। রাতে শহরটিতে কোনো বিদ্যুৎ ছিল না।’
সোমবার ভোররাতে গাজিয়ান্তেপের কাছে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে আরো একটি ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। কর্মকর্তারা বলেছেন, এটি ‘আফটারশক’ ছিল না।
আফটারশকের ভয়ে অনেকে আবার বৃষ্টি ও তুষারপাতের মধ্যে রাত কাটিয়েছে। মঙ্গলবার দিনের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকারী দল এবং স্থানীয় বাসিন্দারা ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে জীবিত ব্যক্তিদের সন্ধানের কাজ আরো জোরদার করেছেন।
সিরিয়ায় উদ্ধার অভিযানে ইতিমধ্যে সমস্যা বাড়তে শুরু করেছে। রাস্তাঘাট ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় তুরস্ক থেকে জাতিসংঘের জরুরি সাহায্য পাঠানোর পথ বন্ধ হয়ে গেছে। উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ত্রাণ সংস্থা হোয়াইট হেলমেটস ইমার্জেন্সি রেসপন্স গ্রুপ বলছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের বাঁচাতে সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।
জাতিসংঘ, ইইউ, ন্যাটো এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, ভারত, জাপান, ইরাক, ইরান, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, গ্রিস, পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশের সরকার থেকে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে আন্তর্জাতিক সাহায্য পাঠানো হচ্ছে।