সিরিয়া-তুরস্ক ভূমিকম্প

লাশের স্তুপ বাড়ছেই, ছাড়িয়েছে ১১ হাজার

তুরস্ক-সিরিয়া
  © সংগৃহীত

তুরস্ক ও সিরিয়া যেনো মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। সেখানে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। সোমবার ভোররাতে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে মুহূর্তেই লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল আর সিরিয়ার প্রায় ৬ হাজার ভবন। প্রতি মুহূর্তে ধ্বংসস্তূপ থেকে বের হয়ে আসছে মরদেহ। এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। 

মৃত্যুর সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)

তীব্র শীতের মধ্যেই ভূমিকম্পে ধসে পড়া হাজারো ভবনের নিচে আটকা পড়াদের জীবিত উদ্ধারে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছেন উদ্ধারকর্মী, দমকলকর্মী, চিকিৎসাকর্মী, সামরিক ও বেসামরিক মানুষ। তুরস্কে মোতায়েন করা হয়েছে ৭৫টি বিমান। এদিকে প্রাণহানি বাড়ায় তুরস্কের ১০ প্রদেশে তিন মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।

এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশের সহায়তা পৌঁছেছে তুরস্কে। একযোগে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে তুর্কি সেনাবাহিনীর সাথে। ১১০ জন উদ্ধারকর্মীর দল পাঠিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।

ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, বৈরি আবহাওয়া, ভারী যন্ত্রপাতির স্বল্পতার কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছানো এবং সেখানে উদ্ধারকাজে বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারকর্মীদের।

অনেক এলাকায় কর্তৃপক্ষের তাৎক্ষণিক সাড়া না পেয়ে খালি হাতেই বাসিন্দারা জীবিতদের উদ্ধারে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজে নেমে পড়েন। ভূমিকম্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তুরস্ক সিরিয়ার প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ। দুই দেশের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে লাখো মানুষ এখন অবস্থান করছে খোলা আকাশের নিচে।

তুরস্কের ১০টি প্রদেশকে বিপর্যস্ত এলাকা ঘোষণা করে সেখানে ৩ মাসের জরুরি অবস্থা জারি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যেপ এরদোয়ান। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সাময়িক আশ্রয়ের জন্য সরকারি পর্যটন হাব আনতালিয়ার হোটেলগুলো খুলে দেওয়া হবে।

তবে উদ্ধার অভিযান নিয়ে অসোন্তোষ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। ১৯৯৯ সালের পর দেশটির দেখা সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পে কর্তৃপক্ষের ধীর ও অপর্যাপ্ত প্রতিক্রিয়ায় একাধিক শহরের বাসিন্দারা হতাশ ও ক্ষুব্ধ বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ভূমিকম্পে ভয়াবহ সংকটে রয়েছে সিরিয়া। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার মতে, ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতি তুরস্ক অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হলেও ১১ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত সিরিয়ার অবস্থা খুবই নাজুক। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভিন্ন সংস্থা ইতিমধ্যে মানবিক সাহায্যের জন্য অর্থ সংগ্রহ শুরু করেছে।

এদিকে সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় কাজ করা হোয়াইট হেলমেটের জন্য তহবিল বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। এর অংশ হিসেবে ৮ লাখ পাউন্ড অতিরিক্ত দেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

এদিকে সিরিয়ার প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন।