ইসরায়েলের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ

আন্তর্জাতিক
ইসরায়েলের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ  © সংগৃহীত

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে আবারও বিক্ষোভ করেছেন লাখ লাখ ইসরায়েলি নাগরিক। মূলত নেতানিয়াহুর নতুন সরকারের বিচার বিভাগীয় সংস্কার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে শনিবার (১১ মার্চ) এই বিক্ষোভ আয়োজন করা হয় এবং এতে লাখো মানুষ অংশ নেন।

কয়েক লাখ ইসরায়েলির অংশগ্রহণে হওয়া এই বিক্ষোভকে অনেকে ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ বলে অভিহিত করেছে। মূলত বিচার ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের জন্য সরকারি পরিকল্পনার বিরুদ্ধে গত ১০ সপ্তাহ ধরে ভূখণ্ডটিতে এই বিক্ষোভ চলছে। রোববার (১২ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার আয়োজিত এই বিক্ষোভে হাইফার মতো শহরে রেকর্ড সংখ্যক বিক্ষোভকারী দেখা গেছে। এছাড়া প্রায় ২ লাখ বিক্ষোভকারী এদিন তেল আবিবের রাস্তায় নেমেছিলেন বলে মনে করা হয়।

নেতানিয়াহু সরকারের বিচার বিভাগীয় সংস্কার পরিকল্পনার সমালোচকরা বলছেন, এই সংস্কার পরিকল্পনা ইসরায়েলের গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তবে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার বলছে, তাদের পরিকল্পিত এই পরিবর্তনই ভোটারদের জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে।

বিক্ষোভের আয়োজকরা বলেছেন, শনিবার প্রায় ৫ লাখ গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারী ইসরায়েলজুড়ে রাস্তায় নেমেছিল। আর তাই এদিনের বিক্ষোভকে ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেৎজ ‘দেশের ইতিহাসে বৃহত্তম বিক্ষোভ’ বলে অভিহিত করেছে।

ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বেয়ের শেভাতে বিক্ষোভরত জনতাকে বলেছেন, ইহুদি এই দেশটি ‘তার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সংকটের’ মুখোমুখি হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, ইসরায়েলের বিচার ব্যবস্থাকে সংশোধন এবং সুপ্রিম কোর্টকে দুর্বল করার একটি পরিকল্পনা সম্প্রতি উন্মোচন করেছে ইসরায়েলের নতুন সরকার। এসব সংস্কার বাস্তবায়ন হলে ইসরায়েলের পার্লামেন্টের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের রায়গুলোকে বাতিল করা সহজ হবে।

তবে সমালোচকরা বলছেন, নেতানিয়াহু সরকারের এই সংস্কার পরিকল্পনা ইসরায়েলের বিচারিক স্বাধীনতাকে পঙ্গু করবে, দুর্নীতিকে আরও উৎসাহিত করবে, সংখ্যালঘুদের অধিকার নষ্ট করবে এবং ইসরায়েলের আদালত ব্যবস্থাকে বিশ্বাসযোগ্যতা থেকে বঞ্চিত করবে।

এছাড়া নতুন এই সংস্কার পরিকল্পনা ইসরায়েলের চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স সিস্টেমকে হুমকির মুখে ফেলবে বলেও দাবি করে আসছেন বিক্ষোভকারীরা। মূলত ওই আইন পাস হলে আইনসভা এবং নির্বাহী বিভাগের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা সীমিত হয়ে যাবে। একইসঙ্গে বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তমূলক ক্ষমতা পাবেন পার্লামেন্টের আইন প্রণেতারা।

সংবাদমাধ্যম বলছে, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার সংস্কারের জন্য সুপ্রিম কোর্টকে লক্ষ্যবস্তু করার পর জানুয়ারির প্রথম দিক থেকে প্রতি সপ্তাহের শনিবার বিপুল সংখ্যক ইসরায়েলি বিক্ষোভ করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবার ভূখণ্ডটিতে টানা ১০ম সপ্তাহের মতো বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হলো।

এদিকে পৃথক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, নেতানিয়াহু সরকারের এই সংস্কার পরিকল্পনা অনুমোদনের দিকে অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে ইসরায়েলে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ আরও বেড়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগ সংলাপ করার জন্য আবেদন করেছেন।


মন্তব্য