সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান ইমরান খান

ইমরান খান
  © এনডিটিভি

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতাদের গণহারে পদত্যাগের মুখে সরকারের সঙ্গে জরুরী ভিত্তিতে আলোচনায় বসতে চান পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান। খবর ডনের।

শুক্রবার (২৬ মে) ইউটিউব লাইভে জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে ইমরান খান জানান, সবগুলো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও পিটিআই একসাথে বসে দেশকে অগ্রগতির পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি সমাধান খুঁজে বের করার এখনই সময়।

লাহোরে জামান পার্কের তার বাসভবন থেকে তিনি বলেন, আমি (সরকারের সঙ্গে) আলোচনায় বসতে চাই এবং তা যত দ্রুত হয় ততই মঙ্গল। পাকিস্তান নৈরাজ্যের দিকে যাচ্ছে এবং বর্তমানে দেশে যা চলছে, তা কোনো সমাধান তো নয়ই, উল্টো দেশকে আরও বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

আরও পড়ুন:- ইমরান, তার স্ত্রী বুশরাসহ ৬০০ পিটিআই নেতাকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ভাষণে নিজের ও দলের নেতাকর্মীদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ইমরান খান। তিনি বলেন, আমাকে দুবার হত্যা চেষ্টা করে হয়েছে। আমি এখনও আমার জীবন নিয়ে শঙ্কায় আছি। আমি মোটেও নিরাপদ নই।
 
সংলাপের জন্য আবেদনকে দুর্বলতা হিসাবে বিবেচনা করা উচিত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে শারীরিক ও অর্থনৈতিক বাড়াবাড়ি করা কোনো সমাধান নয়। দেশের সমস্যার সমাধান রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সাংবিধানিক কাজ।
 
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, যখনই আমি সংলাপের জন্য বলি, তখনই ক্ষমতাসীন শাসকেরা মনে করে আমি দুর্বল হয়ে যাচ্ছি। তখনই তারা আমার দলে ভাঙন সৃষ্টি করার জন্য পিটিআই নেতা-কর্মীদের উপর আরও বাড়াবাড়ি করতে শুরু করে।

আরও পড়ুন:- দাসত্ব মেনে নেয়ার চেয়ে মরে যাওয়া ভালো: ইমরান খান

তিনি সরকারকে সতর্ক করে বলেন, তাদের ব্যবহার সংযত করা উচিত। কারণ পিটিআইকে ধ্বংস করার চেষ্টা করলে দেশও ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।

তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলই এর আগে শাসকদের কাছ থেকে এমন বর্বর কর্মকাণ্ড দেখেনি।
 
আগামী নভেম্বরে পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। নির্বাচন নিয়ে ইমরান বলেন, যদি সাংবিধানিক সময়সূচী অনুযায়ী নির্বাচন হয়, সেক্ষেত্রে তার দল পিটিআই জিতবে এবং পিটিআই নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে বর্তমানে যে অভিযান চলছে তাতে আসলে তার দলের জনপ্রিয়তা আরও বাড়ছে।

আরও পড়ুন:- ইমরান খানকে ছেড়ে যাচ্ছেন দলের শীর্ষ নেতারা

গত ৯ মে আলোচিত আল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকে ইমরান খানের গ্রেফতারের পর তার দল পিটিআইয়ের নেতাকর্মীরা দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু করেন এবং সেই বিক্ষোভে পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিভিন্ন সেনা স্থাপনা ও সেনা সদরদফতরে হামলা হয়।
 
এসব হামলার ঘটনার পর সংশ্লিষ্টদের ধরতে দেশজুড়ে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে নিরাপত্তা বাহিনী। এর মধ্যেই গত কয়েক দিন ধরে পিটিআই ত্যাগ করছেন একের পর এক শীর্ষ ও মধ্যম সারির নেতা। গ্রেফতারের আতঙ্কে অনেক কর্মী-সমর্থকও গা-ঢাকা দিয়েছেন।
 
নেতাকর্মীদের দলত্যাগের প্রসঙ্গে ইমরান খান এর আগে বলেছেন, সরকারের নিপীড়ন ও চাপের মুখে তারা পিটিআই থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে যেসব নেতাকর্মী দল ছেড়েছেন, তারা বলছেন কোনো চাপের মুখে নয়, নিজের ইচ্ছেতেই দল ছেড়েছেন তারা।


মন্তব্য