দুই নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে বালিচাপা দেওয়ার অভিযোগ

গাজা
  © সংগৃৃহীত

গাজায় এবার ইসরায়েলি সৈন্যদের বিরুদ্ধে ২ জন নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা ও মরদেহ বুলডোজার দিয়ে বালিচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

আল-জাজিরায় সম্প্রচার করা একটি ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, উপকূল বরাবর একটি খোলা এলাকা দিয়ে হেঁটে উত্তর গাজায় ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় ইসরায়েলি সৈন্যরা ২ জন নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে কাছ থেকে গুলি করছেন।

তাদের একজন সাদা কাপড় উঁচিয়ে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন যে তারা অপরাধী নন। তাদের হত্যার পর বুলডোজার দিয়ে মরদেহ বালিচাপা দেয় ইসরায়েলি বাহিনী।

এই ঘটনার কঠোর নিন্দা জানিয়ে হামাস বলেছে, এর মাধ্যমে আবারও প্রমাণ হলো ইসরায়েল কতটা বর্বর ও ফ্যাসিবাদী আচরণ করছে।

এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে নিহতের মোট সংখ্যা পৌঁছেছে ৩২ হাজার ৫০০ জনে। এ ছাড়া গত অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৭৫ হাজার ফিলিস্তিনি।

বুধবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত বছরের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের ভয়াবহ হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ৩২ হাজার ৪৯০ জনে পৌঁছেছে।

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, একই সময়ে অন্তত ৭৪ হাজার ৮৮৯ জন ফিলিস্তিনি ইসরাইলি হামলায় আহত হয়েছেন। 

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলের হামলায় ৭৬ জন নিহত এবং আরও ১০২ জন আহত হয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অনেক ভুক্তভোগী এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে ও রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন এবং উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।’

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরাইল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইলি এ হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া ইসরাইলি আগ্রাসনে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

জাতিসংঘের মতে, ইসরাইলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সবাই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এ ছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ কোনো ধরনের আশ্রয় ছাড়াই বসবাস করছে এবং প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম ত্রাণবাহী ট্রাক এই অঞ্চলে প্রবেশ করছে।

গত সোমবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ পবিত্র রমজান মাসে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবিতে একটি প্রস্তাব পাশ করেছে। হামাস এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও ইসরাইল যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ফিলিস্তিনি এই ভূখণ্ডের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

সূত্র: আল জাজিরা, আনাদোলু এজেন্সি


মন্তব্য